বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে বাংলাদেশেই রয়েছে ‘সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড’ বা SONG নামে বিশ্বের অন্যতম গভীরতম খাদ! এটা বিশ্বের সেরা ১১টি গভীর খাদ বা ক্যানিয়ন এর মাঝে অন্যতম তবে অনেকে সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গভীর খাদও বলে থাকে। এটি আজ থেকে প্রায় ১২৫,০০০ বছর আগে তৈরি হয়েছে। বহু আগে ব্রিটিশরা সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড নামটি দেয়। এর কারণ হলো সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড যেখানে শুরু সেখানে হঠাৎ করেই পানির গভীরতা বেড়ে গেছে, ব্রিটিশদের ধারণা ছিলো সমুদ্রের এই খাদের কোনো তল নাই এজন্য বলেছিলো সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড

সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডকে স্থানীয়রা বলে নাই বাম ,সাগরে ফুট কিংবা মিটার না ওরা হিসাব করে বাম, দশ বাম, বিশ বাম, আর ঐ জায়গা নাই বাম ,মানে এই জায়গাটার কোন হিসেব নাই। জায়গাটা মারিয়ানা ট্রেঞ্চের মতো। বাংলায় বলে অতল স্পর্শী।

বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রানির অবাধ বিচরণের কারণে সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড বিখ্যাত ।প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা এই গভীর খাদটি সমুদ্রের অন্যান্য অংশ থেকে গভীর বলে এখানে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণীর অভয়ারণ্য । তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য তিমি,পপাস ডলফিন পৃথিবীর বৃহত্তম ইরাবতী ডলফিন,গোলাপি পিঠকূজো ইন্দো প্যাসিফিক ডলফিন ও মশ্রিন পিঠের (পাখনাহীন) ইমপ্লাইস ডলফিন ।

আসলে সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড ডলফিন পরপাস ও তিমির হটস্পট। ‘‘সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড’ পৃথিবীর একমাত্র সোয়াচ যেখানে এই তিনটি সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী একসঙ্গে দেখা যায়। মংলা বন্দরের ২০০ মাইল দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের একটি গভীরতম খাদের নাম সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড। বলা হতো, এর কোনো তল নেই। কিন্তু সাগরের এই তলদেশে পানির গভীরতাও এখন মাপা যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, এর গভীরতা সাড়ে ৭শ’ মিটার বা আড়াই হাজার ফুট। ডলফিন, তিমি, হাঙ্গর ছাড়াও দামি সামুদ্রিক সম্পদের বিশাল মজুদ রয়েছে সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে।

গবষেকদের মতে, তিমি ও ডলফিনের মতো বড় জাতের সামুদ্রিক প্রাণির প্রজনন কেন্দ্র সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড। নানা জাতের কাছিম ও কাঁকড়াও এখানে আসে ডিম ছাড়তে। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় ও নৌবাহিনীর সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। গত মার্চ ও নভেম্বরে নোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে দু’দফা গবেষণা চালায় ইসাবেলা ফাউন্ডেশন।

প্রমঙ্গত, গুরুত্ব ও গভীরতার বিবেচনায় সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয় ব্রিটিশ আমলে। এটি বিশ্বের ১১টি গভীরতম গিরি খাদের একটি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটি মূলত সামদ্রিক অভয়াশ্রম।

source : ইসাবেলা ফাউন্ডেশন