সরকারকে হুঁশিয়ার করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‌বিএন‌পির চেয়ারপারসন খা‌লেদা জিয়াকে মু‌ক্তি না দি‌লে কেউ হাত গু‌টি‌য়ে ব‌সে থাক‌বে না। কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁকে মুক্ত করে আনা হবে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।

রিজভী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘৭৩ বছর বয়সী এই নেত্রীর প্রকৃত শারীরিক অবস্থা কী, তা আমরা এখনো জানি না। তাঁর মুক্তি নিয়ে যে টালবাহানা শুরু করেছেন, তা বন্ধ করুন। তা না হলে কেউ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। মনে রাখবেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া এ দেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে না। এটাই শেষ কথা।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জি‌ডি‌পি প্রবৃ‌দ্ধি বাড়ার সরকারি ঘোষণা একটা চাপাবাজি। রাজকোষ কেলেঙ্কারিসহ সব ব্যাংক লুট করে ফোকলা করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে স্বাভাবিক লেনদেনেও বর্তমানে প্রভাব পড়ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমতে কমতে এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে। বিদেশি রেমিট্যান্স ধস নেমেছে, দুঃশাসনের কবলে পড়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে, রপ্তানি আয় কমছে ব্যাপক হারে। উন্নয়নের নামে চলছে দেশজুড়ে হরিলুট। গ্লোবাল কম্পোজিটিভ ইনডেক্স বলছে, এশিয়ার মধ্যে নেপালের পরেই সবচেয়ে খারাপ রাস্তা বাংলাদেশের। তার পরও জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ার সরকারি ঘোষণা চাপাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ একটি বিরাট দুর্নীতি ও চুরির মহাবিদ্যালয়, যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের শিক্ষা দেওয়া হয়। চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা একমাত্র আওয়ামী লীগই অর্জন করেছে। আর এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবেই খালেদা জিয়াকে মিথ্যা জালিয়াতির নথির মাধ্যমে বানোয়াট মামলায় বন্দি রাখা হয়েছে। কিন্তু এতে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।’

জোটের শরিক এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অলী আহমদের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘২০ দলীয় জোট এখনো ঐক্যবদ্ধ আছে। অলি ভাই অনেক প্রোগ্রাম করছেন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সেল গঠন করা হয়েছে। তাদের কাজ প্রপাগান্ডা চালানো। আসন বণ্টন নয়, আগামী নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাঁর নেতৃত্বেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে ২০ দলীয় জোট।’

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান, কবির মুরাদ, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।