দেশের তৃতীয় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জিআই নিবন্ধন সনদ পেল চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম। রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের হাতে জিআই সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, মানের জন্য সারা বিশ্বে বাংলাদেশি আমের বিশাল বাজার রয়েছে। আম দিয়েই বাঙালি জাতির নিজস্ব পরিচয় বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা সম্ভব।জিআই সনদ অর্জনের ফলে দেশে খিরসাপাত আমের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমকেন্দ্রিক অর্থনীতি জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

২০১৬ সালে জিআই পণ্য হিসেবে প্রথমবারের মতো জামদানিকে মতো স্বীকৃতি দেয় পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর। পরের বছর জাতীয় মাছ ইলিশ জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পায়। এবার সেই স্বীকৃতি পেল খিরসাপাত আম।ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায়, এ আমে আলাদা ট্যাগ বা স্টিকার ব্যবহার করা যাবে। প্রাকৃতিক উপায়ে আম উৎপাদন করে সব গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে বাজারজাত করতে হবে। বিশেষ জাতের আম আলাদাভাবে চিহ্নিত হওয়ায় রপ্তানিতে তুলনামূলক বেশি দাম পাওয়া যাবে।খিরসাপাত আম আকারে মাঝারি, গড়নে ডিম্বাকৃতির, প্রতিটি আমের ওজন ১৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত।

কাঁচা অবস্থায় রঙ হালকা সবুজ, পাকলে সবুজাভ হলুদ রঙ ধরে। খোসা মসৃণ ও আঁটি পাতলা।আঁশবিহীন হওয়ায় এবং মিষ্টি স্বাদ ও গন্ধের জন্য ল্যাংড়ার পর এ আমের কদরই সবচেয়ে বেশি।আমকেন্দ্রিক গবেষণা এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে সরকারের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “আমসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ফল, ফুল, পাখি ও পণ্যকে জিআই নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

দ্রুত নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ‘ল্যাংড়া’ এবং ‘আশ্বিনা’ আমের অনুকূলেও জিআই সনদ প্রদানের জন্য পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, খিরসাপাত আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় দেশে-বিদেশে এ আমের ব্যাপক চাহিদা ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা তৈরি হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আলাদা ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ বাড়বে।

ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) রেজিস্ট্রার মো. সানোয়ার হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।