ভোলার তজুমদ্দিন টু মনপুরার নৌ-পথে একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম সি-ট্রাক দীর্ঘদিন অচল থাকায় সম্পূনর্ণরূপে যাতায়াত ২৫ দিন ধরে বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সরকারী চাকরিজীবি সহ সাধারণ যাত্রীরা পড়েছে চরম দূর্ভোগে। আটকা পড়েছে নিত্য প্রয়োজনী মালামাল।

দীর্ঘদিন সিট্রাকটি বন্ধ থাকায় যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছেন। সিট্রাকটি বন্ধ থাকার কারণে এপার-ওপারের যাত্রীদের চরম দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। মানুষ বাধ্য হয়ে ইঞ্জিন চালিত ছোট ট্রলারে করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মানুষের নিত্যদিনের এহেন দূর্ভোগের চিত্র লাগবে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সাধারণ মানুষ।

জেলার সাথে বিচ্ছিন মনপুরা উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমই হচ্ছে নৌ পথ। এ রুটে বর্ষা মৌসুমে সি-ট্রাক ও শুষ্ক মৌসুমে লঞ্চ চলাচল হয়ে আসছিলো। গত ২৫ ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে একমাত্র সি ট্রাক এস.টি শহীদ শেখ কামাল। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, মেঘনায় ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঞ্জারজোন ঘোষণা করে সরকার। এই সময় মেঘনায় বেক্রসিং সনদধারী নৌযান ব্যতিত সকল প্রকার নৌযান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা জারী রয়েছে।

ভোলা বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারি পরিচালক (বন্দর কর্মকর্তা) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বেক্রসিং সনদ ব্যতিত সকল প্রকার নৌযান চলাচলে সরকারী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মেঘনায় নিরাপদ নৌযান চলাচলে ইতিমধ্যে ট্রাকফোর্স গঠন করা হয়েছে। দ্রুত মেঘনায় চলাচলকারী অনিরাপদ নৌযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।দীর্ঘদিন যাত্রীবাহী একমাত্র সিট্রাকটি বন্ধ থাকায় প্রয়োজনের তাগিদে বিকল্প ব্যবস্থায় যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন নৌ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে অন্যদিকে অতিরিক্ত সময় ব্যায় হচ্ছে। যাত্রী শাহে আলম জানান, জীবনের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে তারা ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট ট্রলারে যাতায়াত করছে।

এদিকে ব্যাস্ত এই নৌরুটে প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল আসে তজুমদ্দিনসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে। অনেক ব্যবসায়ী ভয়ে মালামাল আনতে পারছেন না। আবার যারা ঝুঁকি নিয়ে মালামাল ছোট ট্রলারে করে আনার সাহস করছেন তাদের বেশীরভাগ মালামালই ঢেউয়ের ছিটকে পড়ে ভিজে যায়। ফলে তাদের লাভের চেয়ে লোকসানের মাত্রাই বেশী হচ্ছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের মাঝেও ক্ষোভের কমতি নেই। তবে যাত্রীরা এ ধরনের র্দূভোগ থেকে চিরস্থায়ী পরিত্রাণ চান।

প্রতিদিন কালবৈশাখী ঝড়ের আতঙ্ক বিরাজ করছে যাত্রীদের মাঝে। প্রতিদিনই আকাশটা কালো মেঘে ছেঁয়ে গিয়ে প্রচ- গতিতে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। আর ঐ সময়ে এই যাত্রীবাহী ছোট ট্রলার যদি মেঘনা নদীর মাঝে চলমান থাকে তাহলে নৌদুর্ঘটনায় হতাহতের মত ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।

এব্যাপারে মনপুরা সরকারি হাজিরহাট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন জানান, জেলার সাথে নৌপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সীট্রাক বন্ধ রেখে টেন্ডারে পাওয়া সীট্রাক কর্তৃপক্ষ ট্রলারে যাত্রী পারাপার করছে। এই দ্বীপের মানুষ বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ ছোট ছোট মাছ ধরার ট্রলারের মেঘনা পাড়ি দিচ্ছে। এদিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার। তানাহলে অতীতের মত নৌ-দুঘর্টনায় প্রাণহানীর আশঙ্কা রয়েছে।

ভোলা বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক মোঃ নাছিম বলেন, লোকবল সঙ্কটের কারনে মেঘনা থেকে অনিরাপদ নৌযান বন্ধ করা যাচ্ছেনা। তারপরও সংশ্লিষ্ট উপজেলার প্রশাসনকে অভিযান পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে।এব্যাপারে বরিশাল বিআইডব্লিউটিসির সহকারি জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, মনপুরা-তজুমুদ্দিন রুটে যাত্রীবাহি সীট্রাক এসটি শহীদ শেখ কামাল যান্ত্রিক ত্র“টির জন্য বন্ধ রয়েছে। দ্রুত এই রুটে যাতায়াত করবে যাত্রীবাহি সিট্রাকটি।

এব্যাপারে মনপুরা উপজেলার নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ বলেন, মেঘনায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনিরাপদ নৌযানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতি মধ্যেই আমরা অনিরাপদে চলাচল নৌযান আটক করে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহণ করেছি। দ্রুত সিট্রাকটি চালুর জন্য চেষ্ঠা করে যাচ্ছি।