পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমানের উপর দুস্কৃতকারীদের হিংস্র ও বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি পাবনা জেলা ইউনিটের উদ্যোগে পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি পাবনাস্থ কমিটির সভাপতি, পাবনা সরকারি কলেজের শিক্ষক প্রফেসর শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষক নুর এ আলম, শিক্ষক রাজু আহমেদ, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের শিক্ষক কামরুজ্জামান শাহীন, সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রব প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা দাবী করেন, শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগড়, সেখানে শিক্ষকের উপর হামলা কোন ভাবেই কাম্য নয়। বাবা মার সাথে সন্তানের সম্পর্ক রক্তের। আর শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক আত্মার। শিক্ষকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা সুন্দর ভাবে পড়ালেখায় এগিয়ে যায়। কিন্তু সেই সকল শিক্ষার্থীর হাতে যদি এই মানুষ গড়ার কারিগরেরা লাঞ্ছিত হয়, সেখানে বলার কোন ভাষা নেই আমাদের।

সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর শহিদুল ইসলাম আইন শৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত দুস্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামি রোববার থেকে পরপর তিনদিন প্রত্যেক কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা কালো ব্যাচ ধারণা করবে। তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি সঠিক বিচার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করবো।

এদিকে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে চলাকালে একাত্মতা প্রকাশ করেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক। এ সময় তিনি বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের মামলা দায়েরের পরপরই আইন শৃংখলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভূক্ত আসামী ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আরও যারা জড়িত আছে, তদন্ত করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ মে পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের উচ্চতর গণিত পরীক্ষা চলাকালে ১০৬ নং কক্ষ অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ২ পরীক্ষার খাতা কিছু সময়ের জন্য জব্দ করেন কক্ষ পরিদর্শক বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমান। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীরা ক্ষুব্দ হয় ওই শিক্ষকের উপর। এ ঘটনার জেরে ১২ মে কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় কলেজের গেটেই দূর্বৃত্তরা শিক্ষক মাসুদুরের উপর হামলা চালিয়ে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। বুধবার রাতেই কলেজের অধ্যক্ষ এসএম আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালিয়ে জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের মো. শাহেদ আলীর ছেলে সজল ও পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চি গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে শাফিন শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।