লালমনিরহাটে চলতি এসএসসি পরীক্ষার একটি কেন্দ্রে বাংলা প্রথমপত্রে ১৯৩ জন পরীক্ষার্থীর ২০১৮ সালের সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ১৭ কক্ষ পরিদর্শককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর। নতুন করে একজনকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
বহিষ্কৃত কেন্দ্র সচিব হলেন, সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল আলম। বহিষ্কৃত বাকি ১৬ জনের জনের নাম জানা যায়নি।

পরীক্ষার্থীরা হলেন, সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর উচ্চ বিদ্যালয়, কাজিচওড়া উচ্চ বিদ্যালয়, হীরামানিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কাশিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি পরীক্ষার ৭০২নং কেন্দ্র লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়। একজন অনুপস্থিত মিলে এ কেন্দ্রে মোট ৮৬৭ জন পরীক্ষার্থী সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ের পরীক্ষা দেয়।
এতে পুরাতন সিলেবাসের অধীনে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের আলাদা কক্ষে পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্র সচিব তা করেননি। ফলে ২০২০ সালের সিলেবাসের অধীনে অংশ নেয়া ওই কেন্দ্রের ১, ২, ৩, ২০ ও ২১ নং কক্ষের মোট ১৯৩ জন পরীক্ষার্থী ২০২০ সালের সিলেবাসের প্রস্তুতি নিলেও তাদেরকে ২০১৮ সালের সিলেবাসের প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হয়েছে।

পরীক্ষার শেষ সময় বিষয়টি কেন্দ্র সচিব (বড়বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক) শফিকুল আলম জানতে পেরে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের কন্ট্রোলারসহ জেলা প্রশাসনকে অবগত করেন। বোর্ডের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে ওই সকল পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র আলাদাভাবে বান্ডেল করে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে জেলা প্রশাসন কেন্দ্র সচিব এবং ওই সকল কক্ষে পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন কেন্দ্র সচিবসহকে ১৭ জন কক্ষের পরির্শকদের বহিষ্কারের করা হয়।

বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদ্য বহিষ্কৃত কেন্দ্র সচিব শফিকুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক ওই সকল পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র আলাদা করে পাঠানো হয়েছে। তবে এসব পরীক্ষার্থীর ফলাফলে কোন প্রভাব পড়বে না বলেও জানান তিনি।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে কেন্দ্র সচিবসহ ১৭ জন কক্ষ পরিদর্শককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, দায়িত্বের অবহেলার দায়ে কেন্দ্র সচিবসহ কক্ষ পরিদর্শকদের বহিষ্কার করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ফলাফলে যাতে প্রভাব না পড়ে, তাই বোর্ডের সাথে কথা বলে উত্তরপত্রগুলো আলাদাভাবে পাঠানো হয়েছে।