শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সাহিত্য-সংস্কৃতি ও খেলাধূলাসহ অন্যান্য সকল ভালো কাজে যুক্ত থাকতে হবে। প্রকৌশলীদের শুধু অ্যাকাডেমিক জ্ঞান অর্জন নয়, এর সঙ্গে ব্যবস্থাপনা, হিউম্যান রিসোর্স, নেগোশিয়েশন, যোগাযোগের দক্ষাতাসহ নানামুখী জ্ঞান অর্জন করতে হয়। তাদের এমনভাবে তৈরি করতে হবে যে, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য যেন পূর্ণাঙ্গ উপযোগী হন।

তিনি বলেন, প্রকৌশলীরা তৃণমূল থেকে মেগা প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত। তারা যদি সততা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আরো দক্ষতা দিয়ে কাজ করে, তাহলে ২০৪১ সালের আগেই এদেশ সুখী ও সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। তিনি ডুয়েটের সার্বিক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ডুয়েটের নামকরণে তৎকালীন শিক্ষার্থীদের যে গৌরব রয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। ডুয়েট শিক্ষা, গবেষণা, প্রকাশনা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।

বুধবার বিকেলে তিনি গাজীপুরস্থ ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)-এর ১৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

বিশেষ অতিথি উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে এখন যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে। অনেক গ্রাজুয়েট একাডেমিকভাবে স্কীলড্ হলেও ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগের দক্ষাতাসহ বাস্তবমুখী জ্ঞান অর্জন না করায় কর্মক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে। তাই আমাদেরকে একাডেমিক স্কীলের পাশাপাশি নৈতিকতা, সততাসহ অন্যান্য দক্ষতার দিকে জোর দিতে হবে। আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এদিকে মনোযোগী হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালে আমরা বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতি চালু করে যেভাবে এগিয়ে গিয়েছি, যদি নিয়মিত শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে তা ব্লেন্ডেড করতে পারি তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা আরো বেগবান হবে। তিনি ডুয়েটের সাফল্যের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশে প্রকৌশল ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরো অধিকতর বিকাশে ডুয়েট সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান প্রকৌশল-প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করে সকল নির্দেশনা বাস্তবায়নের দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং ডুয়েটের বর্তমান সমস্যা, সম্ভাবনা এবং সম্ভাব্য সমাধানগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডুয়েটকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্য সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।

সভায় বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আবু তালেব মো. কাওসার জামিল, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, ডুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি ও টেলিফোন শিল্প সংস্থার এমডি প্রকৌশলী ফখরুল হায়দার চৌধুরী, ডুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ও আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানী লি.-এর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, ডুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী বিনয় ব্যানার্জী, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন মোল্লা, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন প্রমূখ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন।