জহির ভূইয়া :
দুই দিন বাদেই পবিত্র রমজান ঈদ ২০২২। প্রতি বছর যা হয়, এবছরও কিন্তু এর ব্যতিক্রম নয়। আগে যে দৃশ্য ছিল এখনও সেসব দৃশ্যই বহাল রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সাধারণ মানুষ নাড়ীর টানে ঘরে ফিরতে চেষ্টা করছে। ঈদের দিনের সকাল অবদি এই চেষ্টা অবহ্যাত থাকবে। এটাই প্রতি বছরের স্বাভাবিক দৃশ্য।
রাজধানী ঢাকা থেকে ঘরে ফেরার এই আপ্রাণ চেষ্টা আরো কয়েক দিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। রমজানের মধ্যভাগ থেকেই এক দল ট্রেনের টিকিট কেটে নিশ্চিন্ত হয়েছিল। তাদের কথা আলাদা, কিন্তু বাকীরা এখনও বাড়ী ফেরা নিয়ে বিপাকে। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে টানা দুই-তিন দিন ধরেই বাস ষ্টেশনে বা লঞ্চ ঘাটে রাত কাটিয়েছে বাড়ী ফেরার আসায়। কেউ যেতে পেরেছে, কেউ পারেনি।

আজ শনিবার, হিসেব অনুযায়ী মঙ্গলবার ঈদ উদ্্যাপন হবে। আজ ঢাকা ছাড়ার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাবে। এতে জীবনের ঝুঁকিতো থাকছেই। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গতকাল রাত ৮টায় পাটুরীয়া-দৌলদিয়া ঘাটে লঞ্চ বন্ধ ঘোষণা। এতে হাজার হাজার সাধারণ যাত্রী মহা বিপাকে পড়েছে ঘাটের সামনে দাঁড়িয়ে। প্রশাসনকে অবশ্যই এ বিষয়ে নজরদানী বাড়াতে হবে।

এছাড়া বাসে চড়ে বাড়ী ফেরাটা ঈদে সময় সাধারণ যাত্রীদের জন্য রীতিমতো অত্যাচারের পর্যায়ে পড়ে। সরজমিনে গাবতলি গিয়ে দেখা মিলল এর সত্যতার। উত্তরাঞ্চলের ৩ শত টাকার ভাড়া ১ হাজার টাকা বাকী করেছে বাসের সুপারভাইজার। তারপরও মানুষ যাচ্ছে। আপনজনের কাছে ফেরার আনন্দ কেউ মিস করতে চায় না।

এ আনন্দটা বাসের মালিকপক্ষ ব্লাকমেইল করছে সাধারণ যাত্রীদেরকে। সেতুমন্ত্রী তাই তো গতকাল গাবতলি গিয়ে অতিরিক্ত বাস ভাড়া না নেয়ার অনুরোধ জানালেন। এতেই বিষয়টি পরিষ্কার আসলে কি হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ করাটা যেন কঠিন কোন কাজ।

এরপর রয়েছে লঞ্চে বাড়ী ফেরা। এতে ভাড়া কিছুটা কম লাগলেও জীবনের ঝুঁকি থাকছেই। ২০২২ সালে একাধিক লঞ্চ দূর্ঘটনা ঘটেছে। সে হিসেবে ঈদের সময়টাতে যে পরিমাণ যাত্রীর চাপ বেড়ে যায় তাতে লঞ্চ দূর্ঘটনার সুযোগও আরো বেড়ে যায়।

ঈদের বাড়ী ফেরাটা যেন সাধারণ মানুষের কাছে এক আতংকের নাম। এর মধ্যে কেবল ট্রেনেই নিরাপদ, বাসে ভাড়ার নামে অত্যাচার আর লঞ্চে জীবনের ঝুঁকি। এটাই বাংলাদেশী ঈদ আনন্দ, এর মাঝেই আমরা বেঁেচে আছি, থাকব। তবে যেন ঈদ আনন্দটা কান্নায় রূপ না নেয় সেটাই সকলের কাম্য।