এক সাক্ষাৎকারে শত কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত একটা‘দিন দ্য ডে’ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তো কোনো লাভ হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অনন্ত বলেন, চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আসলে মিশার কোনো অবদানই নেই। সে আমার ছবির নিয়ে বলার কে?

শনিবার রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমাসে সিনেমা দেখতে এসে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিশা সওদাগরের ওই মন্তব্যের বিপরীতে অনন্ত জলিল আরও বলেন, মিশা সওদাগর একজন পুরোনো আর্টিস্ট। তিনি যেটা ভেবেছেন, সেটা বলেছেন। তিনি প্রযোজকও না, ক্রিয়েটিভ পার্সনও না। তার দ্বারা সিনেমার উন্নতি হয় না। যার কোনো ধরনের ইনভেস্টমেন্ট নেই, যার নতুন ক্রিয়েটিভিটি নেই তার দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নতি হবে কীভাবে?
অনন্ত জলিলের এমন মন্তব্যের শোনার পর মিশা বললেন, অনন্ত জলিল আসলে আমার কথাটা ভুল বুঝেছেন কিংবা ভুলভাবে ব্যাখা করেছেন। হতে কেউ আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা তাকে দিয়েছে। আমি আসলে অনন্ত জলিলের সমালোচনা করিনি। করেছিলাম বাজেটের। ‘

মিশা বলেন, ‘আমার কথা হলো ১২০ কোটি বাজেট নিয়ে। ‘দিন দ্য ডে’ ১২০ কোটি দিয়ে নির্মিত। এতো বাজেট দিয়ে একটা ছবি না বানিয়ে যদি এই বাজেট দিয়ে শাহরুখ খানে রেড চিলির মতো একটা স্টুডিও বানিয়ে দিতেন তাহলে সেই স্টুডিও থেকে শাকিব খান, শুভ, বাপ্পি, সাইমন ও সিয়ামদের ছবিও বানানো যেতো। আমরা সবার ছবি সেখানে কাজ হতো। অনন্তর যেহেতু শখে ছবি করেন তিনিও বছরে ভালো একটা ছবি বানাতেন। আমার কথার মূল উদ্দেশ্য ছিলো এটাই বলা। কিন্তু সেটা না বুঝে উল্টা বুঝে কি সব বললেন।’

অনন্ত বলছেন চলচ্চিত্রে মিশার কোনো অবাদন নেই। মিশা কি মনে করেন? প্রশ্ন রাখলে ঢাকাই ছবির এই খল অভিনেতা বলেন, অবদান না থাকলে তো আর তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতাম না। আমি নিজেও ছবি প্রযোজনা করেছি। ছবিটি ততটা ব্যবসা করেনি।’

অভিনেতা হিসেবে অনন্ত জলিলকে মিশার কেমন লাগে?- এ প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ জানিয়ে মিশা বললেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে অনন্ত দারুণ। ভালো ব্যবসায়ী। সিআইপিও তিনি। একজন ভালো প্রযোজক। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দারুণ একটা গুন আছে তার। কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ফলাও করে বলাটা হয়তো উচিত নয়।’

মিশার ভাষ্য, ‘চলচ্চিত্রের মানুষদের পাশে শুধু অনন্তই কিন্তু দাঁড়ায় না। আরও অনেকেই আছেন। তারা কিন্তু কখনো এগুলো সামনে আনেন না। তার মধ্যে আছেন আলমগীর ভাই। উনি কত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা জানলে সবাই অবাক হয়ে যাবেন। কিন্তু সেটা উনি সামনে আনতে চান না। ডিপজল সাহেব কি পরিমাণ হেল্প করে ধারণা আছে কারও? আরও অনেকেই আছেন এই তালিকায়।’

গত শনিবার মিশা সওদাগরকে উদ্দেশ্য করে অনন্ত জলিল বলেন, ‘কথা বলার আগে চিন্তা করতে হবে, কী ব্যাপারে আমি কথা বলছি। মিশা সাহেবের যদি এতই যোগ্যতা হয়, তাহলে আজ পর্যন্ত ‘দিন দ্য ডে’র মতো একটা সিনেমা বানাতে পারলো না কেন? একটা বানিয়ে দেখাতো। তিনি তো আমেরিকাতে থাকে, তাকে আমেরিকান সিনেমা দেখতে বলেন। বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে আমেরিকায় বাড়ি-গাড়ি করেছেন। সেখানের সিনেমাও দেখেন। ‘দিন দ্য ডে’র সঙ্গে সেখানকার সিনেমার তুলনা করেন।’

এর আগে সাক্ষাৎকারে মিশা সওদাগর অনন্ত জলিলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন শত কোটি টাকা দিয়ে একটি সিনেমা না বানিয়ে এই অর্থে বছরে কমপক্ষে অর্ধশত সিনেমা নির্মাণ করলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চেহারা পাল্টে যেতে বাধ্য। এতে অনন্ত জলিল ‘কালচারাল ইমপোর্টেন্ট পারসন’ এবং চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে উঠতে পারবেন।