প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিএনপি কোনো সংলাপে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা তো সংলাপের কথা বলিনি। আমরা শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সঙ্গে সংলাপ করব না। কারণ তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন না।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আর কোনো গ্রেপ্তার (বিএনপির কর্মীদের) হবে না, পুলিশি হয়রানি হবে না, গায়েবি মামলা হবে না; কিন্তু এর তিন দিন পর থেকে আমাদের প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- কোনো চাপ নেই। এখানেই বোঝা যায় এই দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি তার কোনো দায়িত্ব নেই। মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই রাষ্ট্রকে সত্যিকার অর্থে কার্যকর চিন্তা তার নেই।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- কার সঙ্গে কথা বলব, কার সঙ্গে সংলাপ করব। এটার রেজাল্ট কী? আমাদেরও প্রশ্ন একটাই, রেজাল্ট কী? আজকের এই প্রধানমন্ত্রী, তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক, তিনি সবার সামনে ওয়াদা করেছেন নির্বাচনে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না, পুলিশ আর গ্রেপ্তার করবে না, কোনো মামলা দেবে না। নির্বাচন পর্যন্ত কোনো পুলিশি হয়রানি করা হবে না। তার তিন দিন পরেই পুলিশি নির্যাতনে সারা দেশের বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা ঘর-বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। ঘরে ও রাস্তায় থাকতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, তারপর তিনি কী করে আশা করেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারে থাকবেন আর রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? আজকে শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দল বলছে এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। এমনকি সিপিবিও বলেছে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।

যমুনা নদীকে সংকুচিত করার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেটিকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হাজার বছর ধরে বহমান একটি নদীকে ছোট করার যে প্রকল্প, সেটি মারাত্মক আত্মঘাতী। এর ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, গত ১১ মার্চ বিএনপি ঘোষিত দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় কয়েকটি জেলায় আকস্মিক ন্যক্কারজনক হামলা চালায়, মৌলভীবাজারে মানববন্ধন কর্মসূচির শুরুতেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের মদদে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নেতা নাছের রহমানসহ প্রায় ২৫ জন গুরুতর আহত হন। নাছের রহমানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিনা কারণে এ হামলা ন্যক্কারজনক। সভায় এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপিরে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন উপস্থিত ছিলেন।