DoinikBarta_দৈনিকবার্তা_Sohel-01-620x330

দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ১০ এপ্রিল: বিয়ের বছর ঘোরেনি। তারুন্যদ্বীপ্ত সময় পার করছিলেন এ দম্পতি। ছয় মাস পরে কোলজুড়ে পৃথিবীর আলো দেখতে আসছে সন্তান। এসব নিয়ে এ নবদম্পতির ছিল নানামুখি উচ্ছ্বাস আর অপেক্সা। স্বামী জালাল সিকদারের সঙ্গে ঢাকা থেকে ফিরছিলেন নববধু রুবী। বাসটি ছিল ঘাতক সোনারতরী পরিবহন। এ ট্রাজেডিতে বুধবার রাতে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেন প্রিয়তম স্বামী জালালকে। সুখের জীবন গড়ার প্রস্তুতিতে ছিলেন রুবী মহাব্যস্ত। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে জালাল বিএসসি পড়ছিলেন। বছর পরেই কোন চাকরি জোটাবেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে সুখের সংসারে চাকা গড়াবেন। আসবে কোলজুড়ে সন্তান। কিন্তু বিধাতা তাদের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে। চোখের সামনে স্বামীর অকালমৃত্যু। নিজেও গুরুতর জখম হয়ে প্রথমে ফরিদপুরে, পরে কলাপাড়া হাসপাতালের শয্যায়। স্বামীর শোকে অচেতন পড়ে আছে রুবী। তার মা কোহিনুর বেগম সার্বক্ষণিক পাশে বসে থাকছেন। ভাবছেন, মেয়ের ভাগ্যাকাশে কালো মেঘের এমন ঘোরতর ছায়ায় ঢেকে গেল। দু’চোখ ঝাপসা হয়ে যায় তার। জালালকে তার পশ্চিম মধুখালীর বাড়িতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দাফন করা হয়েছে। এদৃশ্যও দেখার ভাগ্য ছিল না রুবীর। একই এলাকায় রুবীদেও বাড়ি। পারিবারিক ইচ্ছায় প্রায় এক বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল।

ও“বী বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় অবস্থান করছিল। স্বামীর সঙ্গে গ্রামে ফিরছিলেন। কিন্তু বিধাতার ইচ্ছায় দু’জনেই ফিরলেন। একজন লাশ হয়ে। রুবীর মা জানান, জ্ঞান কখনও ফিরলে উর্ধচিৎকারে স্বামীকে ডাকে। তুমি কো-থা-য় গেলে আমাকে ছেড়ে। আমাকেও আল্লাহ নিয়ে যাও। তোমার সন্তানকে কী বলব। এমনসব আহাজারিতে তখন সব নীরব হয়ে যায়। বাতাস যায় ভারি হয়ে। হয়তো কিছুদিন পরে রুবীও সুস্থ হয়ে ওঠবে। গর্ভের অনাগত শিশু পৃথিবীর আলোতে চলে আসবে। কিন্তু পারবে না দেখতে তার বাবাকে। পাবে না বাবার ¯েœহমাখা আদর-ভালবাসা। এভাবে একটি দুর্ঘটনা নববধু রুবীর জীবন থেকে কেড়ে নিল তার স্বামী, স্বামী-স্ত্রীর জীবন-সংসার গড়ার স্বপ্ন। বিয়ের রঙ আহ্লাদের সময় না কাটতেই বিধবা হয়ে গেল রুবী। রুবী ও তার মায়ের প্রশ্ন সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে পিতৃত্বের স্বাদ কিভাবে মেটাবেন।