DoinikBarta_দৈনিকবার্তা roso

দৈনিকবার্তা-চাঁদপুর, ২২ এপ্রিল: একাধিক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে বহুল আলোচিত সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুনাভ চক্রবর্তী এই আদেশ দেন। ২০০৮ সালে খুলনার এক নারীকে চাঁদপুরে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আদালত তার এই শাস্তি দিয়েছে। এছাড়া তার ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৮ সালের ১৮ অগাস্ট ফরিদগঞ্জের নানুপুর খালপাড়ে খুলনার দৌলতপুরের সজলা গ্রামের সাহিদা বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন রসু। পরে পুলিশ সাহিদার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইন্যুবালের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুনাভ চক্রবর্তী বুধবার সাত বছর আগের ওই ঘটনার রায় ঘোষণা করেন। আসামি রসু খাঁ এ সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। মামলার বিচার চলাকালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ১১ নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।

রায়ে একটি ধারায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। এছাড়া অন্য একটি ধারায় তাকে ৮ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৮ সালের ১৮ অগাস্ট ফরিদগঞ্জের নানুপুর খালপাড়ে খুলনার দৌলতপুরের সজলা গ্রামের সাহিদা বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন রসু। পরে পুলিশ সাহিদার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।ওই সময় চাঁদপুর মডেল থানার তৎকালীন এসআই নজরুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু তদন্তে কোনো তথ্য না পেয়ে মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।এর মধ্যে ২০০৯ সালের ২০ জুলাই টঙ্গীর নিরাশপুর মসজিদের ফ্যান চুরির একটি মামলায় রসু খাঁকে গ্রেপ্তার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। এরপর একের পর এক হত্যারহস্যের জট খোলার খবর দিতে শুরু করে পুলিশ। রসুর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ১১ নারীকে হত্যার অভিযোগ।

চাঁদপুরের বিচারিক হাকিম আমিরুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ১১ খুনের বর্ণনা দেন রসু।চাঁদপুরের মদনা গ্রামের রসু সেই জবানবন্দিতে বলেন, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি একের পর এক হত্যা শুরু করেন। প্রেমের ফাঁদে ফেলে মূলত পোশাক কর্মীদের তিনি চাঁদপুরে নিয়ে আসতেন এবং ধর্ষণের পর হত্যা করতেন।১০১ জন নারীকে খুন করে সিলেটের মাজারে গিয়ে সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছা ছিল বলেও জবানবন্দিতে জানান এই হত্যাকারী।রসু পুলিশ রিমান্ডে সাহিদাকে হত্যার কথা স্বীকার করার পর ২০১০ সালে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়। তদন্ত শেষে এ মামলায় রসু খাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।এরপর আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে রসুর বিচার শুরু করে। আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় তার পক্ষে মামলা লড়তে রাষ্ট্রীয় খরচে অ্যাডভোকেট নইমুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়।গত সোমবার এ মামলায় যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার পর আদালত বুধবার রায় ঘোষণা করল।রায়ের পর অতিরিক্ত পিপি সায়েদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। দীর্ঘদিন পর সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ’র উপযুক্ত সাজা হয়েছে।অন্যদিকে আসামির আইনজীবী নইমুল ইসলাম বলেন, এই রায়ে ন্যায়বিচার হয়েছে কিনা তা মহামান্য হাই কোর্ট নির্ধারণ করবে। এটা প্রাথমিক জাজমেন্ট।