18595_1

দৈনিকবার্তা-খুলনা, ২৭ এপ্রিল: ড্র নয় খুলনা টেস্টে জয়ই চান টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তবে এ টেস্ট জিততে হলে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে টাইগারদের আর এর জন্য তার দল প্রস্তুত বলে জানান তিনি।সোমবার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুশফিক।মঙ্গলবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে দুই দলের মধ্যে সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে।সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই টেস্টের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলতে হয় তাকে। তবে জয়ের বিকল্প ভাবছেন না তিনি।

মুশফিক বলেন, ‘ড্রয়ের কথা ভেবে খেললে রক্ষনভাব চলে আসে। তবে এসব নির্ভর করছে ম্যাচের পরিস্থিতির উপর। তারপরও আমাদের ম্যাচে নামতে হবে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে। জয় ছাড়া ভিন্ন কোনো কিছু করার চিন্তা মাথায় নেই। দলে অনেক ম্যাচ উইনার খেলোয়াড় আছে। এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ, নতুন চ্যালেঞ্জ নেয়ার জন্য আমরা কেন প্রস্তুত হব না? আমি মনে করি জয়ের চিন্তা করাই আমাদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।

ওয়ানডেতে সফরকারীদের হোয়াইট ওয়াশ ও টি-টুয়েন্টিতে জয় পাওয়ায় এটি বাড়িত আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলে মনে করেন তিনি। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দু’টি টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছিলো, আমরা তো জয়ের মধ্যেই আছি।দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই ফর্মে আছে জানিয়ে মুশফিক আরও বলেন, আমাদের বোলিং আক্রমণ যেমন তাতে ২০ উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা আছে। ব্যাটসম্যানদেরও ৬০০’র বেশি রান করার ক্ষমতা আছে। দলের ফিল্ডাররা প্রাপ্ত সুযোগগুলো যদি কাজে লাগাতে পারে রেজাল্ট আমাদের পক্ষে আসবে।পাকিস্তানের বিপক্ষে এখনও কোন টেস্ট ম্যাচ না জেতার আক্ষেপ দূর হবে মনে করে মুশফিক বলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে যতগুলো টেস্ট খেলেছি এতো ভাল মানসিক অবস্থা নিয়ে এর আগে আমরা মাঠে নামিনি।আমরা আত্মবিশ্বাসী। ৫ দিন ভাল ক্রিকেট খেলার আত্মবিশ্বাস আমাদের মধ্যে রয়েছে। লড়াইয়ের জন্য মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত ক্রিকেটাররা ।ওয়ানডেতে মাশরাফি অধিনায়ক হিসেবে দুর্দান্ত করেছেন সুতরাং টেস্টে ভালো করার জন্য মুশফিকের উপরও চাপ থাকবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চাপ নেই তবে চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন। আমাদের ওয়ানডে ও টুয়েন্টি২০ ভাল হয়েছে। ঠিক তেমনই চেষ্টা করব টেস্ট সিরিজে। পাকিস্তান টেস্টের চার নম্বর দল। ওদের টেস্ট স্কোয়াডে অভিজ্ঞ কিছু খেলোয়াড় আছে। আমি বলব এটা চাপ নয়, এখানে প্রত্যাশা জড়িত। আশা করছি ৫ দিন যদি আমরা সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি তাহলে রেজাল্ট আমাদের পক্ষে আসবে।

খুলনাকে বলা হয় লাকি ভেন্যু, এ ম্যাচ জয়ে এ ভেন্যু কোনভাবে সহায়ক হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যা, এটাতো বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে। বেশ কিছুদিন ধরে লংগার ভার্সন খেলছেন না ক্রিকেটাররা। এটার প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়তো অনুশীলন ম্যাচ খেলতে পারলে ভালো হতো, তবে এ দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই খেলার মধ্যে ছিলেন আর তাদের ভাল করার সক্ষমতাও আছে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ টেস্টের একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৪টি ম্যাচই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ এসেছিল টেস্ট জেতার। কিন্তু শেষ অবধি জয় ধরা দেয়নি। মুলতান টেস্টের আক্ষেপ মুশফিকের মনে নাড়া দেয়। অবশ্য মুশফিক তখনও বিকেএসপি’র ছাত্র। এ ব্যাপারে মুশফিকের জবাব, খেলাটা দেখেছিলাম এবং খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। আক্ষেপ অবশ্যই আছে। আক্ষেপ শুধু এটা নয়, টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের যে ক্ষমতা সেই অনুযায়ী আমরা শেষ ১৫ বছর ধরে টেস্ট খেলতে পারেনি। সত্যি বলতে শেষ ২ বছর ধরে আমরা বাইরে এবং হোমে খুব ভাল ক্রিকেট খেলছি।এদিকে, অধিনায়ক মিসবাহ উল হক ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ইউনিস খান দলে ফেরায় বাংলাদেশ সফরে টেস্ট সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে চায় পাকিস্তান। দুই ম্যাচের সিরিজে খুলনায় প্রথম টেস্ট শুরু হচ্ছে।৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর একমাত্র টি-২০ ম্যাচেও বাংলাদেশের কাছে প্রথমবারের মত পরাজয়ের পর এ পর্যন্ত পাকিস্তানীদের জন্য যেন এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

মিসবাহ ও ইউনিস দুই সিনিয়র খেলোয়াড় সিমিত ওভার সিরিজে দলের অংশ ছিলেন না। আগামী মাসে ৪১ বছরে পা রাখা মিসবাহ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন এবং ৩৭ বছর বয়সী ইউনিস দলে সুযোগ পাননি।টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান শিকারী জাভেদ মিঁয়াদাদের চেয়ে মাত্র ৫০৬ রানে পিছিয়ে থাকা ইউনিস দেশের সর্বোচ্চ ২৮ সেঞ্চুরিরও মালিক।তরুণ ব্যাটসম্যান ১৯ বছর বয়সী সামি আসলাম বলেন, তারা খুবই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এবং তারা যখন দলে থাকে পাকিস্তান সাধারণত ভাল করে।উভয়েই বিশ্ব মানের খেলোয়াড় এবং অবশ্যই এ সিরিজে তারা পার্থক্য গড়ে দেবেন।