Rajshahi Mango Market News 6-6-15

দৈনিকবার্তা-রাজশাহী , ০৬ জুন: আমের রাজ্য রাজশাহীতে জমে উঠেছে জমজমাট বাণিজ্য। আমকে ঘিরে রাজশাহী অঞ্চলে রাজশাহী অঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের তৈরি হয়েছে। বাজারগুলো থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে রসালো ফল আম। আম কেনাবেচায় ব্যস্ত সময় পার করছে আমচাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। রাজশাহী অঞ্চলের যে কয়েকটি বড় আমের হাট বসে তার মধ্যে অন্যতম রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের বানেশ্বর হাট। হাটের বিশাল এলাকা ছাড়াও আমের মৌসুমে মহাসড়কের দুই পাশে গড়ে উঠে এ আমের হাট। ইতোমধ্যেই আমের রাজ্যের হাটগুলোতে দেশি বিভিন্ন গুটি জাতের পাশাপাশি গোপালভোগ, মোহনভোগ, হিমসাগর, লখনা প্রজাতির আমের জমপেশ কেনাবেচা চলছে।

নাম, স্বাদ, আকার ভেদে আম কেনাবেচা চলছে। বর্তমানে বাজারে মণ গোপাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। বিভিন্ন গুটি প্রজাতির আম আকার ও স্বাদ ভেদে ৬ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, হিমসাগর এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বানেশ্বর হাটের কয়েকজন আম ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন এ হাট থেকে ১৪ থেকে ১৫ ট্রাক পর্যন্ত আম ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। রাজশাহী জেলার বাঘা ও চারঘাট উপজেলা মুলত আমের এলাকার। এসব এলাকার বেশির ভাগ আম ব্যবসায়ীরা বানেশ্বর হাটে তাদের আম বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। এদিকে বানেশ্বর হাট ছাড়াও রাজশাহীর অন্য হাটগুলোতেও জমে উঠেছে আমের বাজার।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান মতে, গত ৭ বছরে রাজশাহীতে আমের উৎপাদন বেড়েছে আড়াই গুণেরও বেশি। ফলন ও লাভ উভয়ই বেশি হওয়ায় অনেকেই আম চাষে উৎসাহী হয়েছেন। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭-০৮ মৌসুমে রাজশাহীতে মোট আম আবাদী জমির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৮৫৪ হেক্টর এবং আম গাছ ছিল ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮৪টি। সাত বছরের ব্যবধানে গত ২০১৩-১৪ মৌসুমে রাজশাহীতে আমের উৎপাদন হয় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন। এই সময়ের ব্যবধানে রাজশাহীতে আমের উৎপাদন বেড়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫৮১ মেট্রিক টন। আর চলতি ২০১৪-১৫ মৌসুমে রাজশাহীতে আমের আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে। গত বছরের উৎপাদন সমপরিমাণ ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে উৎপাদনের শুরুতেই লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যেতে পারে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

আম ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানান, সাধারণত তিনটি ধাপে আমের বাজার এক মাসের বেশি সময় ধরে থাকে। প্রথম ধাপে গুটি জাতের আমের সঙ্গে বাজারে উঠে গোলাপ, খিরসাপাতের মতো স্বাদেভরা আম। দ্বিতীয় ধাপে বাজার উঠে ন্যাংড়া ও ফজলি। আমের বাজারে শেষে ধাপে বাজারে উঠে আশ্বিনা জাতের আম। বর্তমানে আমের বাজারে প্রথম ধাপের মৌসুম চলছে। বানেশ্বর বাজারে আম বিক্রি করতে আসা জহুরুল ইসলাম নামে এক আম ব্যবসায়ী জানান, গ্রামে গ্রামে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আম কেনার জন্য ঘুরছে। তবে নিজের বাগানের আম বেশি দাম পাওয়ার আশায় নিজেই বাজারে নিয়ে এসেছেন। ৩ মণ আম গোপালভোগ প্রতি মণ বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৪০০ টাকায়।