জামালপুরে বিপদসীমার ওপরে যমুনার পানি

ক’দিনে অবিরাম বর্ষণ এবং প্রতিবেশী দেশের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ব্র‏হ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৩ জুলাই জামালপুরে বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদ সীমার ২১ সেঃ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জামালপুরের পানিউন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানাগেছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ইসলামপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে দুই উপজেলায় প্রায় বিশ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরসহ বাহাদুরাবাদ, চুকাইবাড়ি ও চিকাজানি এই ৩টি ইউনিয়ন এবং ইসলামপুর উপজেলার যমুনার তীরবর্তী কুলকান্দী, বেলগাছা, চিনাডুলী, সাপধরী,নোয়ারপাড়া ও ইসলামপুর সদর এই ৭ট ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে কৃষকের কাঁচা তরিতরকারী, শাকসবজি, অসংখ্য বীজ তলা উঠতি আখ ও পাট ফসল তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। তবে আগাম জাতের দেশী পাট পঁচানোর নতুন পানি পেয়ে ধুমছে পাট কাটছেন কৃষকগণ।

ভারীবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দ্রুত পানি বৃদ্ধির ফলে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।বর্তমানে জামালপুরের বকশীগঞ্জ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।পানিবন্দি হয়েছে এসব এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নবকুমার চৌধুরী জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে ২৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে পানি পরিমাপক স্কেলের ১৯.৬৫ সেন্টিমিটার পয়েন্টে অবস্থান করছে। ফলে বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যমুনার পূর্বতীরে ভয়াবহ নদীভাঙন চলছে। যমুনার ভাঙনে গত দুইদিনে ঘোনাপাড়া গ্রামের ৩০টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

চিনাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, যমুনার ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে চিনাডুলি ইউনিয়নের দেওয়ানপাড়া থেকে শিংভাঙা পর্যন্ত এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বাঁধটির ক্ষতি হলে ইসলামপুর ও মেলান্দহের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হবে।ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল জানান, বেলগাছা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া এবং নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাজলা-কাঠমা এলাকায় যমুনার পূর্বতীরে ভাঙন বেড়েছে।এছাড়াও নদীভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে শিংভাঙ্গা এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং গুঠাইল বাজারসহ ঘোনাপাড়া এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ। এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনো সাহায্য পাওয়া যায়নি।