%e0%a6%97%e0%a7%83%e0%a6%b9%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%96%e0%a6%ac%e0%a6%b0

বাসা-বাড়িতে নিয়োজিত গৃহকর্মীর উপর নির্যাতনের খবর পেলে সেখানে অভিযান চালিয়ে গৃহকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। গৃহকর্মীদের নির্যাতনের খবর পাওয়া মাত্রই গৃহকর্মী বিষয়ক কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছেন সেলের প্রধান শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘গৃহকর্মী বিষয়ক কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল’র দ্বিতীয় সভা শেষে তিনি একথা জানান। শ্রমসচিব মিকাইল শিপার এবং কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামান্য ভুলত্রুটির কারণে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব টলারেট করা সম্ভব না।কয়েকদিন আগে গাজীপুরের এক বাসায় চাঁদপুরের ৯ বছরের মেয়েকে গরম খুন্তি দিয়ে তার মাথায় ছেঁকা দেওয়া হয়েছে। সমস্ত শরীরে যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন। এরকম আরও অনেক ঘটনা ঘটছে। সরকার কোনো ক্রমেই এই সমস্ত অমানবিক আচারণ সহ্য করবে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যার জন্য মনিটরিং সেল থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যদি এই ধরনের কোনো ঘটনা জানতে পারি তাহলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালাবো এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং আইন অনুযায়ী যা যা করা করবো।গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি মানুষ যাতে জানতে পারে সেজন্য দেশের সিটি করপোরেশন, পৌরসভায়, জেলা এবং উপজেলায় মনিটরিং সেলের শাখা কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী ১২ বছরের নিচে কোনো শিশুকে কোনো অবস্থাতেই কোনো কাজে লাগানোর সুযোগ নেই। ১২-১৮ বছরের মধ্যে শিশুকে হালকা কাজে গৃহকর্মে নিয়োগ করতে হলে নীতিমালা অনুযায়ী কর্মঘণ্টা, পড়ার সুযোগ, সাপ্তাহিক ছুটি ও থাকার ব্যবস্থা রাখতে হবে। শর্তগুলো পূরণ সাপেক্ষে কোনো গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া যাবে। তা না হলে মনিটরিং সেল থেকে ওই সমস্ত গৃহকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।আশা করি যারা বাসাবাড়িতে গৃহকর্মী রাখতে চান, তারা সে শর্ত মানতে হবে।শ্রম আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। কোনো কারখানায় শিশু কাজ করলে তা জানানোর আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জানতে পারলে আমাদের জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেবো।

নারায়ণগঞ্জে পেটে বাতাশ ঢুকিয়ে শিশু হত্যার ঘটনার আগে ওই কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন এবং ২০২৫ সালে এমডিজি লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য শতভাগ শিশুশ্রম নিরসনের উদ্যোগ সরকারের রয়েছে বলে জানান চুন্নু।

ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে আগামীতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে তা বাস্তবায়ন হবে। ৬০-৮০ হাজার শিশু এর আওতায় আসবে।

শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগের জন্য কলকারখানা পরিদর্শন পরিদপ্তর ৪৬টি মামলা দায়ের করেছে এবং শিশুশ্রম মনিটরিং করছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।ফরমাল সেক্টরে শিশুশ্রম না থাকলেও ইনফরমাল সেক্টরে শিশুরা কাজ করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে সব মিলিয়ে শিশুশ্রম ১৭ লাখ।গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি- ২০১৫ বাস্তবায়নে গত ২৬ জুলাই ‘গৃহকর্মী বিষয়ক কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল’ গঠন করে সরকার। ২২ সদস্যের এই সেলের চেয়ারম্যান শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।সরকার কোনো ক্রমেই এসব অন্যায়-অমানবিক আচরণ সহ্য করবে না। যার জন্য মনিটরিং সেল থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা আমরা জানতে পারি সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গায় নিজেরাই অভিযান চালাব। তাদের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইন অনুযায়ী যা যা করার আমরা তা করব।

গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতির বিষয়ে সবাইকে অবগত করতে সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং সেলের শাখা কমিটি করা হবে বলে জানান চুন্নু।কয়েক দিন আগে গাজীপুরে নয় বছরের এক মেয়েকে গরম ছ্যাঁকা দেওয়ার তথ্য জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন সে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন, এ রকম আরও ঘটনা ঘটছে।অপরাধ (গৃহকর্মীদের নির্যাতন) অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশে অনেক আইন আছে, আইনগুলো প্রয়োগ করা গেলে প্রচলিত আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।শ্রম আইন অনুযায়ী ১২ বছরের নিচে কোনো শিশুকে কাজে লাগানো নিষিদ্ধ জানিয়ে তিনি বলেন, তবে ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে কাউকে গৃহকর্মী নিয়োগ করতে হলে নীতিমালা অনুযায়ী কর্মঘণ্টা নির্ধারণ থাকবে, পড়ালেখার সুযোগ দিতে হবে, সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।এসব শর্তসাপেক্ষে গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া যাবে। তা না করা হলে অভিযোগ পেলে সেলের পক্ষ থেকে গৃহকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। গৃহকর্মী বা শিশুশ্রম এখন কমার প্রবণতায় রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৩ সালে শিশুশ্রমিক ছিল ২৫ লাখ, ২০১৩ সালে ১৭ লাখে নেমেছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হওয়াতে শিশুশ্রম কমে এসেছে। শিক্ষার হার বেড়ে যাওয়ায় শিশুশ্রম কমে এলেও এখনও আছে। আমাদের টার্গেট ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম যে কোনোভাবে নিরসন করব।ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দেওয়ায় কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদপ্তর ৪৬টি মামলা করেছে বলেও জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী।