%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%9c%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%bf

গাজীপুরের পাতারটেকের ‘জঙ্গি’ আস্তানায় অভিযানের ছবি প্রকাশ করেছে পুলিশ। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান ‘অপারেশন শরতের তুফানে’ ওই আস্তানায় সাত ‘জঙ্গি’ নিহত হয়। সকাল ১০টার দিকে অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরাও পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিল। কিন্তু কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াত, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে শেষ পর্যন্ত জঙ্গিরা পরাস্ত হয়।

‘অপারেশন শরতের তুফানে’ নিহত সাত জঙ্গির ছবি প্রকাশ করা হলেও তাদের এখনও নাম ঠিকানা ও পরিচয় প্রকাশ করতে পারেনি পুলিশ। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b9-%e0%a6%9c%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%bf-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b6গুলশান হামলার পরই নব্য জেএমবি’র শীর্ষ জঙ্গিদের মধ্যে আকাশ নামে এক জঙ্গির নাম প্রথম জানতে পারেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। কিন্তু তার কোনও হদিস তারা পাচ্ছিলেন না। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের কাছ থেকেও এই আকাশের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাচ্ছিলেন না তারা। কেবল জানতে পেরেছেন নব্য জেএমবি’র সংগঠক হিসেবে ফরিদুল ইসলাম আকাশ নামের আরও এক শীর্ষ জঙ্গি রয়েছে।

সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পারেন এই আকাশ কয়েকজন সহযোগীসহ গাজীপুরের পাতারটেকের একটি জঙ্গি আস্তানায় অবস্থান করছে। শনিবারের এই অভিযানে আকাশ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে তারা এ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত হতে জঙ্গিদের আঙুলের ছাপের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখবেন। একইসঙ্গে জঙ্গিদের ডিএনএ টেস্টও করা হবে তদন্তের বিভিন্ন প্রয়োজনে।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ তারা সুনির্দিষ্টভাবে গোয়েন্দা তথ্য পান, গাজীপুরের হাড়িনাল ও পাতারটেকে দু’টি জঙ্গি আস্তানায় নব্য জেএমবি’র সংগঠক ফরিদুল ইসলাম আকাশসহ কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করছে। একই তথ্য পান র‌্যাব কর্মকর্তারাও। গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল হাড়িনালের আস্তানায় গিয়ে পৌঁছে। এর কিছুক্ষণ পরই কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা হানা দেন পাতারটেকে। ওই পাতারটেকেই আরও ছয় সহযোগীসহ অবস্থান করছিল আকাশ। সেখানে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াত, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে ছয় সহযোগীসহ নিহত হয় আকাশ। সকাল ১০টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত পুলিশের অভিযান চলে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়।

আকাশের বিস্তারিত তথ্য জোগাড়েও কাজ করছেন বলে জানান কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আকাশ শোলাকিয়া হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল। এছাড়াও নব্য জেএমবি’র ঢাকা বিভাগের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর এই ফরিদুল ইসলাম আকাশের নেতৃত্বেই নব্য জেএমবি সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ও গোয়েন্দা টিম সেখানে অভিযান চালায়। তবে অভিযানের শুরুতে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা সেটা না শুনে উল্টো পুলিশের ওপর গ্রেনেড ছুড়ে মারে এবং গুলি করে। বাধ্য হয়ে পুলিশও আত্মরক্ষায় আক্রমণ করে। অভিযান শেষে ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাত জঙ্গির লাশ পাওয়া যায়।’

একইদিন হারিনালে র‌্যাবের অভিযানে দুই জঙ্গি রাশেদ মিয়া ও তৌহিদুল ইসলাম নিহত হয়েছে। মাত্র আধা কিলোমিটারের ব্যবধানে জঙ্গিদের দু’টি আস্তানার সন্ধান পাওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।