27-11-16-mymensingh_students-police-clash-1ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে শিক্ষকসহ দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর চড়াও হলে দুজন নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হন বলে ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ দাবি আদায় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম আবুল হাশেম জানান।

তিনি বলেন, পুলিশের লাঠিপেটায় কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও পথচারীর সফর আলী (৭০) নিহত হয়েছেন।অন্যদিকে সংঘর্ষের জন্য আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দায়ী করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে একজন পথচারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেও শিক্ষকের বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি ফুলবাড়িয়া থানার ওসি রিফাত খান রাজিব।আবুল হাশেম বলেন, পুলিশ আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে প্রথমে বাধা দেয়। এরপর দাবি আদায় কমিটি বিকাল পর্যন্ত অবরোধের ঘোষণা দেয়।এতে অনেকেই কলেজ থেকে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে। এতে সফর আলী নামে এক পথচারীর মৃত্যু এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।

লাঠিপেটায় শিক্ষক আবুল কালাম গুরুতর আহত হলে তাকে বেসরকারি কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে জানান সহকর্মী আবুল হাশেম। এ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মঞ্জুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে আনার পর আবুল কালাম আজাদ মারা যান। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।ওসি রিফাত খান বলেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশকে ইট নিক্ষেপ করছিল। তাদের ছত্রভঙ্গ করতেই লাঠিপেটা করা হয়।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে স্থানীয় উপজেলা পরিষদের সামনে সফর আলী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে পুলিশই তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।কলেজ শিক্ষক আবুল কালামের মৃত্যুর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ওসি বলেন, এটা আমাদের জানা নেই।
আন্দোলনকারীরা বলছে, সংঘর্ষের সময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, সংঘর্ষস্থল থেকে ৩০০ গজ দূরে অন্য কোনো কারণে ওই ব্যক্তি মারা যেতে পারেন।

রোববার বেলা দুইটার দিকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সফর আলীর বাড়ি উপজেলার কুশমাইল গ্রামে।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়িয়া কলেজকে জাতীয়করণের জন্য তালিকাভুক্ত না করে উপজেলার অন্য একটি কলেজকে তালিকাভুক্ত করায় দেড় মাস ধরে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন লাগাতার আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে আন্দোলনকারীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে। এ সময় সফর আলী সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হন।

তবে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব বলেন, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ গজ দূরে সফর আলীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। অন্য কোনো কারণে তিনি মারা যেতে পারেন।