গাজীপুরের কালীগঞ্জে অষ্টমী স্নান ও গঙ্গা¯œাণোৎসব পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নিজেদের পাপমোচনে কালীগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্মাশান ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঢল নামে। পুণ্যলাভের আশায় শীতলক্ষ্যা নদের এ স্নান উৎসবে গাজীপুরে জেলাসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন। এ ¯œান উৎসবকে কেন্দ্র করে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের কেন্দ্রীয় শ্মাশান ঘাটে বসছে দুই দিনব্যাপী মেলা। মেলায় বাহারি পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

মহাষ্টমী স্নাণোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি সন্তোষ চন্দ্র রায় জানান, ‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র হে লৌহিত্য তুমি আমার পাপ হরণ কর’ পবিত্র এ মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নাণোৎসব। সোমবার বিকেল ৫টা ৪১ মিনিট ৭ সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া ¯œাণোৎসব চলে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৩২ মিনিট ২৭ সেকেন্ড পর্যন্ত। তবে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ১০ মিনিট থেকে সকাল ১০টা ৯ মিনিট পর্যন্ত থাকবে অমৃত যোগ।

জনশ্রুতি আছে, হিন্দু দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে গোসল করে পাপমুক্ত হন। লাঙ্গল দিয়ে চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে ব্রহ্মনপুত্র নদরুপে নামিয়ে আনেন সমভূমিতে। সমভূমিতে আনার পর তিনি যেখানে এসে লাঙ্গল থামিয়ে বা বন্ধ করে বিশ্রাম নেন। পরে লাঙ্গলবন্ধ কালের বিবর্তনে লাঙ্গলবন্দে রূপ নেয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্নস্থানে অষ্টমী স্নান ও গঙ্গা¯œাণোৎসব পালিত হয়।

কালীগঞ্জ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রণম কুমার দাস জানান, পৌরাণিক এ কাহিনীকে স্মরণ করে কয়েকশ বছর ধরে প্রতিবছর চৈত্র মাসে নির্ধারিত দিনে দেশ বিদেশের লাখ লাখ তীর্থযাত্রী পুণ্যলাভের আশায় লাঙ্গলবন্দে জড়ো হন। ‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র হে লৌহিত্য তুমি আমার পাপ হরণ কর’ পবিত্র এ মন্ত্র উচ্চারণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এরই ধারাবাহিকতায় কালীগঞ্জে কেন্দ্রীয় শ্মাশান ঘাট কমিটির উদ্যোগে প্রতি বছর শীতলক্ষ্যা নদের বিভিন্ন ঘাটের বিভিন্ন স্থানে স্নান উৎসবের আয়োজন করা হয়। আর এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার শিশু-নারী-পুরুষ যোগদেয় ।

এ ব্যাপারে গাজীপুরের কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ দত্ত জানান, কালীগঞ্জে অষ্টমী স্নান ও গঙ্গা¯œাণোৎসব উপলক্ষে সোমবার বিকেল থেকে উৎসবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। ¯œানে আগতরা যাতে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে এবং সুন্দর পরিবেশে ¯œান সম্পন্ন করতে পারে সেজন্য উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্মাশান ঘাট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাসহ যাতায়াতের বিভিন্ন সড়কেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।