রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার জন্য ওধুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে অবহিত করেছেন স্বাস্থ্য সচিব।এ প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ব্যাক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানে সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।বরখাস্তকৃত দুই কর্মকর্তা হলেন- ওষুধ প্রাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন। এ সংক্রান্ত মামলার আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে আদালতে স্বাস্থ্য সচিব প্রতিবেদন দিয়েছেন। এরপর আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহিত দিয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। সচিবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।গত ২১ আগস্ট স্বাস্থ্য সচিবকে তলব করেছিলো হাইকোর্ট। সে অনুসারে হাজির হন সচিব।রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে শিশুর মৃত্যু ঘটনায় আদালতের রায়ে ওধুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কথা প্রতিয়মান হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চায় হাইকোর্ট। এ প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষে সোমবার একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়। যাতে বলা হয়-ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। আদালত জানতে চেয়েছিলো কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে গতকাল ২৩ আগস্ট তলব করা হয়। গতকাল হাজির হন সচিব। কিন্তু গতকাল তার ব্যাখ্যা গ্রহণ না করে আজো তাকে হাজির হতে বলা হয়।

উলে¬খ্য, ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেয় বিচারিক আদালত।রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ওই দুই কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এদিকে, মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯ সালের তিনটি (২গ, ৩ ও ৬) ধারা কেন অসাংবিধানিক ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়।আদালত সূত্র জানায়, একইসঙ্গে ওই আইনে বিধি প্রণয়নের বিধান থাকার পরও তা না করায় সংশি¬ষ্টদের প্রতি রুলে তার কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ২ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম।

ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম সাংবাদিকদের জানান, ১৯৯৯ সালের আইনে এ বিষয়ে বিধি করার কথা বলা আছে। কিন্তু আজও বিধি করা হয়নি। এসব কারণে রিট আবেদন করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে আজ আদেশ দেয় ।ফাতেমা জোহরা নামে এক নারী গতকাল হাইকোর্টে এ রিট আবেদনটি দায়ের করেন।