মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে ইয়াংগুনের জেলা জজ ইয়ে লিউইন অভিযুক্ত ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সো ওর (২৮) বিরুদ্ধে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় ইয়াঙ্গুনের উত্তর জেলা জজ ইয়ে লউইন বলেন, দুই সাংবাদিক মিয়ানমারের ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাদের সাত বছর কারাদণ্ড দেওয়া হলো। ১২ ডিসেম্বর থেকে তাদের দণ্ড কার্যকর হচ্ছে বলে বিবেচনায় নেওয়া হবে। রায় ঘোষণার পর সাংবাদিককে ওয়া লোন বলেন, ‘আমার কোনো ভয় নেই। আমি অন্যায় কিছু করি নাই। আমি ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।’

আদালতের এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রয়টার্সের এডিটর-ইন-চিফ স্টিফেন জে অ্যাডলার বলেন, ‘আজকের দিনটি মিয়ানমার, রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়ালোন ও কিয়াউ সোয়ে এবং যেকোনো স্থানের সংবাদমাধ্যমের জন্য দুঃখজনক দিন।’
তবে এ দুই সাংবাদিক আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। আদালতকে তারা বলেছেন, ‘তারা সাংবাদিকতার নিয়ম অনুসরণ করেছেন।’ আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের ওয়া লোন বলেছেন, তিনি ও কিয়াও সোও কোনো অপরাধ করেননি এবং আদালতে তারা নির্দোষ প্রমাণ করবেন। গত বছর আটক হওয়ার সময়ে ওই দুই সাংবাদিক রাখাইনের ইন দীন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গা হত্যার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। সেনা অভিযানের মধ্যে এই রোহিঙ্গা নাগরিকদের স্থানীয় অধিবাসী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মিলে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়।

আট মাস ধরে চলা শুনানিতে ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ও বলে আসছেন, যে দুই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে তারা সেদিন দেখা করতে গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে আগে কখনও সাক্ষাৎ হয়নি।ইয়াঙ্গুনের একটি রেস্টুরেন্টে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর প্রথমবার দেখা করতে গেলে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের হাতে রোল করা কিছু কাগজ ধরিয়ে দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের গ্রেপ্তার করে চোখ বেঁধে সাদা পোশাকের পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে নেয়।