পুরান ঢাকার চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের এক লাখ টাকা ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান। একই সঙ্গে তিনি নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

চকবাজার এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এ পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি মর্গে রয়েছে। সকাল থেকেই মর্গের সামনে আত্মীয়স্বজনদের ভিড় জমে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় আরো বাড়তে থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চকবাজারের নন্দকুমার সড়কের চুড়িহাট্টায় বুধবার রাতে শাহী মসজিদের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির ট্রান্সফরমার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এরপরই পাশের খুঁটির আরো দুটি ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের শব্দ তারা শুনেছে। তারা বলে, মুহূর্তেই আগুন লাগে জামাল কমিউনিটি সেন্টারে। আগুনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের চারতলা ওয়াহিদ ম্যানশনে। ভবনটির প্রথম দুইতলায় প্রসাধন সামগ্রী, প্লাস্টিকের দানা ও রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদাম থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের আরো চারটি ভবনে। পাশের কয়েকটি খাবারের হোটেলের গ্যাস সিলিন্ডারেরও বিস্ফোরণ ঘটে। পুড়ে যায় সড়কে থাকা একটি প্রাইভেট কারসহ কয়েকটি যানবাহন। এসময় পুড়ে যাওয়া কয়েকটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। রাজধানীর প্রায় সবকটা ইউনিট কাজ করে আগুন নেভাতে। খুবই ঘন বসতি এবং রাস্তা সরু হওয়ায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে।

ঘটনাস্থলে দায়িত্বপালন করা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, যেহেতু এখানে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ আছে, এগুলো খুবই বিস্ফোরণ ঘটছে। এগুলোর টেম্পার অনেক বেশি। এগুলোর সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে আমাদের ফায়ার ফাইটিং করতে হচ্ছে। রেসিডেনশিয়াল এরিয়াতে কোনো কেমিক্যালের গোডাউন থাকার কথা না।চকবাজার এলাকার বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন সংযোগ সাময়িক বিচ্ছিন্ন করে আশপাশের ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।