গাজীপুর নগরবাসীকে সুরক্ষা রাখতে করোনা ভাইরাস সনাক্তের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে ১০ হাজার কিট আমদানী করা হচ্ছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সুরক্ষা পোশাক সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম। প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে কাউকে না যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি রবিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) গাছা এলাকার আঞ্চলিক কার্যালয়ে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান।

মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিপুল সংখ্যক লোক বাস করে। এখানে দু’হাজারের বেশী কল-কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় ২০-২২ লাখ লোক কাজ করে। এখানে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুকি রয়েছে। তাই করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ, বিজিএমইএ, পরিবহণ, ফায়ারসার্ভিসসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠাণের সঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন একযোগে কাজ করবে। এব্যাপারে সকল বিভাগের প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জনসাধারণকে এ ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে করোনা ভাইরাস সনাক্তের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে ১০ হাজার কিট আমদানী করা হচ্ছে। মহানগরের প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের ব্যবহারের জন্য সুরক্ষা পোশাক সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও পুলিশসহ স্বাস্থ্য সেবা সংশ্লিষ্ট অন্যদেরও এ পোশাক দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসকে মোকাবেলা করতে ৮টি থানা ও ৫৭টি ওয়ার্ডের সবক’টিতে ১টি করে মোট ৬৩টি কমিটি গঠণ করা হয়েছে। আমরা সবাই নিজেকে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা করে অন্যকে সুরক্ষা রাখতে একযোগে কাজ করবো। প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে কাউকে না যাওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, যতোটা সম্ভব বাড়ি বা ঘরে বসে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করবেন।

তিনি গাজীপুরের মিল কারখানাগুলোর মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রাথমিকভাবে কোন শ্রমিকের জ¦র বা ঠান্ডার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ যেন তাকে ছুটি দিয়ে দেন। সে যাতে বাসায় অবস্থান করে সেই ব্যাপারে গার্মেন্টস মালিক এবং সিটি কর্পোরেশন সহযোগীতা করবে এবং তাদেরকে অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেয়া হবে। কারখানায় প্রবেশের আগে গেইটে শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করাররও আহবান জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, জেলা সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক খলিলুর রহমানসহ গাসিক এর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগন উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় সিভিল সার্জন খায়রুজ্জামান জানান, গাজীপুরে ইতোমধ্যে প্রায় হাজার প্রবাসী বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। এরমধ্যে ১৮৭জন বিদেশ ফেরত প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়া ইতালী ফেরত ৩৬জন পূবাইলের মেঘডুবি ও ৭জন কাপাসিয়ার পাবুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। তাদের এখনো করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

গাজীপুর ম্েেট্টাপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, পাসপোর্টে দেয়া গাজীপুরের ঠিকানা অনুযায়ী বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের অনেককেই পাওয়া যায়নি। তবে জননিরাপত্তার জন্য পুলিশ তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে।