গোয়েন্দারা আগেই খবর পেয়েছিলেন সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। এই খবরের ভিত্তিতে দিনরাত অভিযান চালানো হয়। সাতক্ষীরা সীমান্তে যাওয়ার পথে প্রায় সব গাড়িতে আগের দিন থেকে রাত অবধি তল্লাশি চালানো হয়।

একইসঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির পক্ষে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়। পাশাপাশি চলে গোয়েন্দা নজরদারি। সন্দেহজনক মাইক্রোবাস প্রাইভেটকারসহ সব যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা শহরস্থ কামালনগরের একটি ফ্ল্যাটে এসে থাকতেন সাহেদ। রাতে সেই ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়। তবে সেখানে তার সন্ধান মেলেনি। এরপর জেলার বাইরে সীমান্তের দৃষ্টি রাখে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

তবে রাতভর অভিযান চালানোর পর গোয়েন্দা দল নিশ্চিত হয়ে যান সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছে সাহেদ। সেভাবেই কড়া গোয়েন্দা নজরদারি চালায় র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা। অবশেষে দেবহাটা উপজেলার শাঁখরা কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদী তীর সীমান্তে ধরা পড়েন সাহেদ। নদী পেরিয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় ভোর সোয়া ৫টার দিকে শাখরা কোমরপুর ব্রিজের পাশে একটি ছোট নর্দমার ভেতর থেকে বোরখা পরা অবস্থায় র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন সাহেদ। ধরা পড়ার আগে তিনি র‌্যাবের নাগালের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় তিনি নদী তীরে পড়ে গিয়ে কাদায় মাখামাখি হন।

প্রত্যক্ষদর্শী কোমরপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম জানান, শাখরা কোমরপুর ব্রিজের পাশে একটি ছোট ড্রেন রয়েছে নর্দমার মতো। সেই ড্রেনের ভেতরে বোরকা পরে শুয়ে ছিলেন প্রতারক সাহেদ। জেলেরা ভেবেছিলেন কোনো পাগল শুয়ে আছে। আমাদের এলাকায় এমন একজন পাগল রয়েছে। সে যেখানে সেখানে শুয়ে থাকে। এরপর র‌্যাবের তিনটি গাড়ি আসে পর পর। চিৎকার করতে থাকে, এই পেয়েছি এই পেয়েছি। আমরা তখন মসজিদে নামাজ পড়ে বের হয়েছি মাত্র। বোরকা পরা অবস্থায় র‌্যাব তাকে বের করে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়। সাহেদের কাছে একটি পিস্তল পেয়েছে র‌্যাব। সাহেদ একটি নৌকাও ভাড়া করেছিলেন। সেই নৌকায় ভারতে চলে যাওয়ার কথা ছিল। শুনেছি নৌকার মাঝি তাকে পার করেননি।

উল্লেখ্য, করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদ একাধিক মামলার আসামি।