গাজীপুরে শ্রীপুরের এক হাসপাতালের ম্যানেজার ও কর্মচারীরা চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে স্ত্রী ও শিশু সন্তানের সামনেই শুক্রবার মারধর করেছে। পরে অসুস্থ্য ওই ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

আহত রোগীর নাম আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার (৩৮)। ঝালকাঠি জেলা সদরের রমানাথপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ তালুকদারের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস শ্রীপুরের মীর সিরামিক্স কারখানার কর্মী।

আহতের স্ত্রী রুবিয়া আক্তার ও স্থানীয়রা জানান, বাম পায়ে লোহার কনা ঢুকে অসুস্থ হয়ে পড়েন আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার। চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে তাকে গাজীপুরে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার পদ্মা হেল্থ কেয়ার ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল এন্ড ট্রমা সেন্টারে নেয়া হয়। হাসপাতালের অভ্যর্থনা বুথের কর্মীরা কুদ্দুসের পায়ের কণা বের করে দেয়ার শর্তের কথা বলে ৭শ’ টাকা ভিজিট নেন। কণা বের করতে না পারলে ভিজিটের ওই টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান তারা। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক রোগীকে দেখে পায়ের কণা বের করতে বিশেষ যন্ত্র হাসপাতালে না থাকার কথা জানিয়ে রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার পরার্মশ দেন।

তিনি জানান, পরে অসুস্থ্য আব্দুল কুদ্দুস হাসপাতালের অভ্যর্থনা বুথে গিয়ে ভিজিটের টাকা ফেরত চাইলে হাসপাতালের কর্মীরা ভিজিট ফেরত দিতে অস্বীকার করে। বার বার ভিজিটের টাকা দাবী করায় হাসপাতালের ম্যানেজার তুহিন আহমেদ উত্তেজিত হয়ে উঠেন। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে তুহিন অসুস্থ্য কুদ্দুসকে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকেন। এসময় হাসপাতালের অন্য কর্মীরাও এসে তাকে এলাপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এতে কুদ্দুস ঠোঁট, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কুদ্দুসের স্ত্রী ও চার বছরের সন্তান রাহাত হোসেন এ ঘটনা দেখে কান্না শুরু করেন। তাদের কান্নাকাটি শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে আহত কুদ্দুসকে উদ্ধার করেন।

শ্রীপুর থানার এসআই আমজাদ হোসেন জানান, ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে পুলিশ ওই হাসপাতালে যায়। সেখানে গিয়ে অভিযুক্তদের কাউকে পাওয়া যায়নি। রোগীকে চিকিৎসা শেষ করে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দুপুরে অসুস্থ্য কুদ্দুসকে নিয়ে তার স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর মিরপুরের ডেলটা হেল্থ কেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের ম্যানেজার অভিযুক্ত তুহিন আহমেদ বলেন, হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ রোগীর ভিজিট ফেরত না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। রোগী নিজেও খারাপ আচরণ করেছেন। কথা বার্তার এক ফাঁকে রোগীর গায়ে অপ্রত্যাশিতভাবে আঘাত লেগে গেছে।