করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রায় সাড়ে চার মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে গাজীপুরস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। শুক্রবার প্রথম দিনে পার্কে দর্শনার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক কম থাকলেও ধীরে ধীরে দর্শনার্থী সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশা করছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ। পার্কে আগত দর্শনার্থী কম থাকায় অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যেই পার্কের বিভিন্ন ইভেন্ট দেখছেন দর্শনার্থীরা। এ ছাড়াও খুলে দেওয়া হয়েছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানসহ বনবিভাগের সকল বিনোদন কেন্দ্র।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে আলীমুজ্জামান নামে এক ব্যবসায়ী শনিবার স্ত্রী সন্তান নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আসেন। তিনি জানান, করোনায় সন্তানের বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ লকডাউনে তারা ঘরবন্দি থাকায় স্বাভাবিক জীবনে অনেকটাই নাভিশ্বাস চলে এসেছিল। তাই একটু বিনোদন দিতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্কে ঘুরতে এসেছি। লোকজন কম থাকায় স্বাচ্ছন্দে বাঘ, সিংহ, পশুপাখিসহ বিভিন্ন ইভেন্ট দেখতে পেয়েছেন।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানান, অন্য সময়ে শুক্রবার বা সরকারি ছুটির দিনে পার্কে অন্ততঃ ১০/১৫ হাজার পর্যটক হলেও গত শুক্রবার ও শনিবার এ সংখ্যা ছিল খুবই কম। দেশে করোনা মহামারীর কারণেই পার্কে পর্যটক সংখ্যা কমে গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন পার্কটি বন্ধ ছিল। এখনও অনেকেই পার্ক খোলার খবরটি জানেন না। তারপরও করেনায় যারা পার্কে এসেছেন তারা দীর্ঘদিন পর হলেও এ দু’দিন ধরে পার্কের বিভিন্ন ইভেন্ট দারুনভাবে উপভোগ করেছেন। তবে এদিন পার্কে স্বাস্থবিধি মেনে প্রতিটি ইভেন্টে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক পর্যটককে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে। পার্ক এলাকায় করোনা সচেতনতা বিষয়ক মাইকিংসহ বিলবোর্ড-পোস্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

পার্কের প্রধান ফটকের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাহিদ অ্যাডভার্টাইজিং এন্ড প্রিন্টিং এর স্বত্ত্বাধিকারী নাহিদা ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন পর শুক্রবার খোলার দিন তাদের মাত্র সহ¯্রাধিক টিকেট বিক্রি হয়েছে। অনেকেই হয়তো পার্ক খোলার খবরটি এখনও জানেনা। আবার যারা শুনেছেন তাদের অনেকেই দিনশেষে বন্ধ হওয়ার সময়ে গিয়ে পার্কে পৌঁছেছেন। তিনি করোনাকালে পার্ক খোলা রাখার সময় আরো আধা ঘন্টা বাড়িয়ে দেয়ারও অনুরোধ করেছেন।

পার্ক কর্মকর্তা বলেন, করোনা মহামারীর জন্য গত ৩ এপ্রিল থেকে এ পার্কটি বন্ধ করা হয়। পরে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার থেকে যথারীতি খুলে দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, করোনা থাবার কারণে প্রথম পর্যায়ে এ পার্কটি গত বছরের ২০ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকে। করোনার প্রকোপ কমলে প্রায় সাড়ে ৭মাস বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১ নবেম্বর সাফারী পার্ক খুলে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আবার করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ মহামারীর রূপ নিলে ৩ এপ্রিল থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত পার্কটি পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।

সাফারি পার্ক প্রকল্প পরিচালক ও উপ-প্রধান বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক দর্শণাথীর জন্য সুযোগ রেখে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ও ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানসহ (ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক) বনবিভাগের সকল বিনোদন কেন্দ্র শুক্রবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হলো। পার্কে আগত সকল দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পার্কটি পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।