নানা আয়োজন ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপিত হয়েছে গাজীপুরস্থ ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) -এর ১৮তম বর্ষপূর্তি। বুধবার সকালে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে ‘ডুয়েট ডে’র শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো. জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি। এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ রঙিন বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন। এর আগে সূর্যোদয়ের সময় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ‘মুজিব শতবর্ষের অঙ্গীকার, প্রযুক্তি নির্ভর উন্নত বাংলাদেশ গড়বার’-এই শ্লোগানকে উপজীব্য করে উদযাপিত হয় এবারের এ অনুষ্ঠান।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ অনুসরণ করে আজ বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধু ড. কুদরত-এ-খুদা কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ে যে নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন, তার মাধ্যমে আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেট দিয়েছে। তাই আমাদেরকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমানে সেরাদের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ডুয়েট আবির্ভূত হচ্ছে। আমি আশা করি, ডুয়েটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে দেশে-বিদেশে আরো সুনাম অর্জন করবে।

এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান বলেন, আজ অত্যন্ত খুশি ও আনন্দের দিন। শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার যে যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো নিয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য প্রকৌশলীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই উন্নত বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা ও গবেষণায় আমাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে ডুয়েটকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ ডুয়েট প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কালের পরিক্রমায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আমরা এই ১৮ বছরে ডুয়েটকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে অর্জন করতে পেরেছি, ভবিষ্যতে শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান বৃদ্ধিতে ডুয়েটকে আরো কয়েকগুণ এগিয়ে নেয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ডুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী বিনয় ব্যানার্জী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইলেকট্্িরক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাজহারুল ইসলাম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্য সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘ডুয়েট ডে’ উদ্যাপনের জন্য সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আলোচনা অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দুপুর ২ টা থেকে অনলাইন প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে একটি ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ডুয়েট ডে’ উপলক্ষ্যে গোটা ক্যাম্পাস সেজেছিল বর্ণিল সাজে।