আজ ২৮ মার্চ ২০২২ সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়। হরতাল চলাকালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে স্বত:স্ফুর্তভাবে হরতালে সমর্থন জানান। নেতৃবৃন্দ জনগণকে তাদের এই সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।

হরতাল কর্মসুচি শান্তিপূর্ণভাবে জনগণের সমর্থনে চলছিল। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সমাবেশ চলাকালীন সময়ে বিনা উস্কানিতে পুলিশ হঠাৎ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও বেধড়ক লাঠিচার্জ করতে থাকে। এতে গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া গুরুতর আহত হন। এছাড়াও ঢাকা মহনগর কমিটির নেতা মিজানুর রহমান মোল্লা, নিজাম হোসেন, চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব ফরহাদ জামান জনি, নারায়নগঞ্জ জেলার নেতা জাহাঙ্গীর আলম বাবু, মেহেদী হাসান, রংপুর জেলার সদস্য প্রত্যয়ী মিজানসহ অন্যরা আহত হন। বাচ্চু ভূইয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাঁকে চিকিৎসা দেন, তাঁর ক্ষতস্থানে তিনটি সেলাই প্রয়োজন হয়। এছাড়া খুলনা জেলার আহŸায়ক মনির চৌধুরী সোহেলসহ আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার এবং ফেনীতে নেতৃবৃন্দকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
হরতালের সমাপনী সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জেনায়েদ সাকি বলেন, “এই সরকার দেশে ভয়াবহ লুটপাট ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার আকাক্সক্ষা এবং সামর্থ্য এদের নেই; বরং জনগণের সাথে তারা নিয়মিত তামাশা করছে। এখন জনগণ টিসিবির ট্রাকের পেছনে হুমড়ি খেয়ে আছড়ে পড়ছেন, দীর্ঘ লাইনে দ্রব্যাদি না পেয়েও ফিরে যাচ্ছেন। মানেটা হচ্ছে কেবল এই অপ্রতুল টিসিবি সরবরাহ আসল চিত্র নয়; দেশে একদিকে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। অন্যদিকে সরকার জনগণের পকেট কাটা বন্ধ করে নাই, বরং লুটপাট ও টাকাপাচার চলছেই। এখানে সরকার ও সিন্ডিকেট কার্যত একসূত্রে গাথা।” তিনি আরো বলেন, “মধ্যরাতের ভোটডাকাত এ সরকার জনগণের তোয়াক্কা করে না, ভোটের তোয়াক্কা করেনা সেজন্য সরকারের কোনোকিছুতেই কোনোকিছু যায় আসেনা। সরকার-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কাজে লাগাচ্ছে। হরতালের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উস্কানীতে পুলিশের হামলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নয় বরং সন্ত্রাসীবাহিনীর কার্যকলাপের সাথে তুল্য। এই গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করেই জনগণের অধিকার প্রতিষ্টা করতে হবে।”

হরতালে পুলিশি হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে আগামীকাল ২৯ মার্চ, ২০২২, মঙ্গলবার বিকাল ৩.৩০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।