জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘১৯৬৬ সালের ৬ দফা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তিভূমি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ এবং বঞ্ছনাহীন একটা জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির জন্য গণমানুষের ম্যানডেট নিয়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সেটি তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক পরিক্রমায় প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁকে পাকিস্তান সরকার বারংবার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসাবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনজুড়ে যে রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছেন, তাতে তিনি সবসময় সচেতন ছিলেন- তিনি যেন জনগণের মধ্য থেকে বেড়ে ওঠে জননন্দিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। বাস্তবতায় সেটিই ঘটেছে; তিনি হয়েছেন মুক্তির মহানায়ক।’

মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থপথে পানি ভবনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে ‘৬-দফার কারণেই ৭০’র নির্বাচনে সর্বাত্মক বিজয়, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছিল’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

দেশের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সবসময়ই অপরিহার্য উল্লেখ করে ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি কোনো দল প্রতিষ্ঠা পেতে চায় তাহলে প্রকৃত অর্থে সেই দলকে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের পক্ষে অবস্থান করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ, বিশ^াস এবং আস্থা থাকতে হবে। অন্যথায় দল হিসেবে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার কোনো সুযোগ বাংলাদেশে নেই। পাকিস্তানের ভাবধারায় পরিচালিত হওয়া দলগুলোর বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অবকাশ নেই, এটি সম্ভবও নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজকে আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধ বা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরোধিতা করা- এসবই ওইসময়ের পাকিস্তানপন্থী চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশ। সামরিক শাসন এবং ধর্মান্ধতার নামে যে রাজনীতি এখানে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তার মধ্যদিয়ে মূলত মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার বিরোধিতা করা হয়। এটি রাজনৈতিক মতাদর্শিক বিষয় নয়, এটি মূলত স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করার শামিল।

আলোচনা সভার শুরুতেই উপাচার্য ৭ জুনে নিহত শহীদ মনু মিয়া এবং আবুল হোসেনসহ ১১ জন শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. এস এ মালেক। সভায় ঐতিহাসিক ৬ দফার উপর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আলোচনা করেন।