যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত মামলার প্রধান আসামিসহ তিন যুবককে আটক করা হয়েছে। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত গাছি দা, চাইনিজ কুড়াল ও বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শহরের রেলরোড এলাকার ফরিদ মুন্সির ছেলে ও মানুয়ার ভাগনে রায়হান (২৫), শংকরপুর এলাকার বাবু মীরের ছেলে ইছা মীর (২০) এবং মামলার পাঁচ নম্বর আসামি আল আমিন (২০)। এদের মধ্যে আল আমিনকে র্যা ব আটক করেছে।

গ্রেফতার ৩ জনের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা শামীম আহম্মেদ মানুয়া ও বদিউজ্জামান ধোনীর মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। এরই মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বেজপাড়া ব্রাদার্স ক্লাবের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মানুয়ার জামাতা যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাত। ইয়াসিন আরাফাত হত্যা মামলায় ধোনীকে আসামি করা হয়।

‘সর্বোপরি এলাকায় দলীয় কোন্দল আর রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ধোনীকে হত্যা করা হয়। মানুয়ার নির্দেশে তার ভাগনে রায়হান এই হত্যাকাণ্ডটি নেতৃত্ব দেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও জানান, ধোনীর বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে ১২টি মামলা রয়েছে। স্থানীয় যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন আরাফাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। এই মামলায় মাসখানেক আগে ধোনী জেল থেকে বের হন। মানুয়া নামে বিএনপির যে নেতার সঙ্গে ধোনীর বিরোধ ছিল, তিনি ইয়াসিন আরাফাতের শ্বশুর।

গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে যশোরের নাজির শংকরপুরে আকবরের মোড় এলাকায় ধোনীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নগর বিএনপির নেতাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মনি। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন, শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের সামনে আশ্রম রোডের আব্দুল আলীমের ছেলে আকাশ (২৫), মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে রায়হান (২৪), শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ও যশোর নগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়া (৪৮), টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের পাশের মিরাজুল বিশ্বাসের ছেলে মন্টু ওরফে অপূর্ব ওরফে আলী রাজ (২২), টিবি ক্লিনিক এলাকার রইস উদ্দিনের ছেলে আল আমিন ওরফে চোর আল আমিন (২৫), আফসারের ছেলে মিলন (২৪), শংকরপুর হারান কলোনির উত্তর পাশের বাবু মীরের ছেলে ইছা মীর (২০) এবং চোপদারপাড়া রোডের মৃত হুজুর ইয়াসিনের বাড়ির পাশের লাভলুর ছেলে রিজভী (২৬)।

এদিকে ধোনীকে হত্যার পর মানুয়ার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তার স্বজনরাও। তাদের অভিযোগ, পূর্ব বিরোধের কারণে ধোনীকে ভাড়াটে লোক দিয়ে খুন করিয়েছেন বিএনপি নেতা শামীম আহমেদ মানুয়া। তিনি পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য। এর আগে তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদলের সভাপতি ছিলেন।