1দৈনিক বার্তাঃ থাইল্যান্ডে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে সেনাবাহিনী এ ঘোষণা দেয়।বিবিসি অনলাইন ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সেনাপ্রধান এ ঘোষণা  দেন।

ভাষণে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল প্রায়থ চান-ওছা বলেন,সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও রাজনৈতিক পুনর্গঠনে কাজ করবে। তিনি বলেন,  দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণের স্বার্থে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলে বাধ্য হল।
দেশে সামরিক আইন জারির দুদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার এক টিভি সম্প্রচারে প্রায়ুথ জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং রাজনৈতিক সংস্কার কাজের জন্য সেনাবাহিনী সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

থাইল্যান্ডে ৬ মাসের সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সমাধান খুঁজতে প্রতিদ্বন্দ্বী সব দলের সঙ্গে বৈঠক করার পর ক্ষমতা দখলের এ  ঘোষণা দিলেন প্রায়ুথ। এ পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষুন্ন হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

টিভি ঘোষণায় প্রায়ুথ বলেন,পরিস্থিতি খুব শিগগিরই স্বাভাবিক করা,সমাজে শান্তি ফেরানো… এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর কাঠামোগত সংস্কার কাজ করার জন্য সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা নেয়া প্রয়োজন।

ব্যাংককে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভাস্থলগুলো সিল করে দিয়ে নেতাদের সরিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী। কয়েকমাসের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং মঙ্গলবার সামরিক আইন জারির পর সেনাবাহিনী এ পদক্ষেপ নেয়।

সেনারা সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের নেতা সুদেপ থাকসুবানকে বৈঠক থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরপরই সেনাপ্রধান টিভিতে ওই  ঘোষণা দেন। ঊর্ধ্বতন এক সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, সমাবেশস্থল   থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে সেনাবাহিনী সেনা ও যান পাঠাচ্ছে।

থাই সাংবিধানিক আদালত এ মাসের শুরুর দিকে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াতকে পদত্যাগের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ইংলাকের পদত্যাগের পরও ক্ষমতায় থাকা তার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলে আসছিল।

বুধবার ইংলাকের সমর্থক ও বিক্ষোভকারী দুপক্ষকেই সমঝোতার জন্য আলোচনায় ডাকেন প্রায়ুথ। কিন্তু আলোচনা কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়। সেনাবাহিনী দুপক্ষের বিক্ষোভকারীদেরকে রাস্তায় অবস্থান করতে দিলেও সংঘর্ষ এড়াতে মিছিল করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সহিংস বিক্ষোভ এবং বির্শঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যেই সেনাবাহিনী মঙ্গলবার জননিরাপত্তার দায়িত্ব   নেয়ার কথা বলে সামরিক আইন জারি করে। কিন্তু এটি কোনো সামরিক অভ্যুত্থান নয় বলেও দাবি করে তারা।

এরপরই বৃহস্পতিবার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেনাপ্রধানের সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা এল। এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

ব্যাংককে গত বছর   শেষের দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ  ভেঙে দিলে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর কয়েক মাস ধরে ব্যাংককের বিভিন্ন এলাকা দখল করে রাখে বিক্ষোভকারীরা।

২০০৬ সালে সেনাবাহিনী ইংলাকের ভাই থাকসিন সিনাওয়াতকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই থাইল্যান্ডে ক্ষমতা লড়াই চলে আসছে।

পল্লী এলাকায় এবং গরিবদের মধ্যে থাকসিন ও ইংলাকের জোরাল সমর্থন থাকলেও শহুরে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণী তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করে আসছে।