36936_b

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (রব) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, কোনো প্রধানমন্ত্রী গুলি করার নির্দেশ দিতে পারেন না৷ অথচ আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন৷ এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে৷ পুলিশ আর অন্যান্য বাহিনী দিয়ে ক্ষমতায় আছে তারা৷ এভাবে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না৷ পৃথিবীর কোনোদেশে কোনো সরকার এভাবে চিরদিন টিকে থাকতে পারেনি৷শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে নাগরিক ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ শীর্ষক গোলটেবিলি আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন৷ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্রযুক্তিবিদ হাবিব উল্যাহ করিমের সঞ্চালনায় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম সামসুল হুদা৷

অনুষ্ঠানে গণফোরাম সভাপতি ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বাঙালি জাতির সামনে আজ বড় চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়িয়েছে৷ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের ১৬ কোটি মানুষকে পাশে চাই৷ড. কামাল বলেন, বাঙালি একটি অসাধারণ জাতি৷ ১৯৭১ সালে কেউ ভাবেনি এখানে স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব৷ কিন্তু আমরা সেটা করেছি৷ আজ সেই জাতির সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়িয়েছে৷ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের ১৬ কোটি মানুষকে পাশে চাই৷তিনি বলেন, আজ আমরা মানুষের পরিচয় দেবো৷ কোন অমানুষের পরিচয় দেবো না৷ বর্তমান রাজনীতিতে যেটা হচ্ছে সেটাকে কোনো সংসদীয় ভাষা বলা যায় না, এটা কোনো রাজনীতিই না৷

কামাল হোসেন বলেন, আমি এই রাজনীতিকে দুই দলের রাজনীতি বলতে চাই না৷ এটা চলমান রাজনীতি৷ এই চলমান রাজনীতিতে কোনো সহিংসতা চাই না৷ কিংবা পুলিশের নির্যাতন চাই না৷ বর্তমানে বল সরকারের কোর্টে রয়েছে৷ তাই সমস্যা সমাধানে সরকারকে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব৷আ স ম রব বলেন, বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী৷ পেট্রোল বোমা মেরে, গুলি করে বর্তমান সংকটের সমাধান হবে না৷ সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে৷

সংলাপের বিষয়ে রব বলেন, সংলাপ দুই দলের মধ্যে কেন, সব দলকে নিয়ে জাতীয় সংলাপ করতে হবে৷ ১৬ কোটি মানুষের অধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে৷তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবো এমন বলাতে মনে হচ্ছে আমরা স্বাধীন কী না৷ মৌলিক অধিকার, নাগরিক অধিকার আমাদের আছে কী না৷দেশে গণতন্ত্র থাকলে একজন প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে বলতে পারেন না, আপনারা যা যা করার দরকার সব করেন দায়িত্ব আমার৷ আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা ও কাম্য নয়৷ রুগ্ন রাজনীতিতে থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে৷

প্রধানমন্ত্রী তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের সমালোচনা করে রব বলেন, আমাদের এক ভাতিজা বলেছেন, যারা গোলটেবিলে বসে আলোচনা করে তারা পাগল৷

রব প্রশ্ন করেন,আমরা তো বঙ্গবন্ধুর সাথে যুদ্ধ করেছি৷ আমরা যদি পাগল হই, তাহলে এদেশে ছাগল কারা?প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে রব বলেন,আপনি ইমার্জেন্সি দিলেন না, তাহলে সভা সমাবেশ করতে দেন না কেন৷ অধিকার আদায়ে কথা বলতে দেন না কেন?বর্তমানে যারা রাজনীতি করছে তারা রাজনীতিবিদ নয় দলবাজ উল্লেখ করে রব বলেন, আপনারা কোথায় যুদ্ধ করেছেন?রাজনীতির নামে বাংলাদেশে যা ঘটছে এবং ঘটে তার স্থায়ী সমাধানে রাষ্ট্রের অভিভাবক রাষ্ট্রপতিকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মত দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার৷

তিনি বলেন, রাজনীতির নামে বর্তমান সংকটের স্থায়ী সমাধান একমাত্র রাষ্ট্রের অভিভাবক রাষ্ট্রপতিই করতে পারেন৷ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বলেন, রাষ্ট্রে স্থায়ী সমাধানে জাতীয় সনদপত্র প্রণয়ন করা প্রয়োজন৷ তিনটি ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একমত হতে হবে৷

নিরপেক্ষ সরকার গঠন প্রয়োজন৷ তাতে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে৷ এ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন আইন-কানুন যুগোপযোগী করবে৷ নিরপেক্ষ সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের অসঙ্গতি দূর করে দেশের সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে৷এ তিন ক্ষেত্রে জাতীয় সনদপত্র করতে রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিলে সমাধান হবে৷সিভিল সোসাইটির মাধ্যমে সংলাপের উদ্যোগ নিলে তাও ফলফসূ হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি৷তিনি বলেন, সংলাপের কোনো পরিবেশ নেই৷ কিন্তু রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে সংলাপের বিকল্প নেই৷

মৃতু্যর মিছিল বাড়ছে৷ পেট্রোল বোমা ও বিচার বর্হিভূর্ত হত্যাকাণ্ড আর নয়৷ এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে তা বন্ধ করতে আইনের মাধ্যমে সমাধানের মতও দেন তিনি৷রাজনীতির নামে বাংলাদেশে যা ঘটছে এবং ঘটে তার স্থায়ী সমাধানে রাষ্ট্রের অভিভাবক রাষ্ট্রপতিকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মত দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার৷

তিনি বলেন, রাজনীতির নামে বর্তমান সংকটের স্থায়ী সমাধান একমাত্র রাষ্ট্রের অভিভাবক রাষ্ট্রপতিই করতে পারেন৷ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বলেন, রাষ্ট্রে স্থায়ী সমাধানে জাতীয় সনদপত্র প্রণয়ন করা প্রয়োজন৷ তিনটি ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একমত হতে হবে৷নিরপেক্ষ সরকার গঠন টওয়োজন৷ তাতে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে৷ এ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন আইন-কানুন যুগোপযোগী করবে৷নিরপেক্ষ সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের অসঙ্গতি দূর করে দেশের সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে৷এ তিন ক্ষেত্রে জাতীয় সনদপত্র করতে রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিলে সমাধান হবে৷

সিভিল সোসাইটির মাধ্যমে সংলাপের উদ্যোগ নিলে তাও ফলফসূ হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি৷তিনি বলেন, সংলাপের কোনো পরিবেশ নেই৷ কিন্তু রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে সংলাপের বিকল্প নেই৷

মৃতু্যর মিছিল বাড়ছে৷পেট্রোল বোমা ও বিচার বর্হিভূর্ত হত্যাকাণ্ড আর নয়৷ এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে তা বন্ধ করতে আইনের মাধ্যমে সমাধানের মতও দেন তিনি৷ সুজনের নির্বাহী ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাষ্ট্রের স্থায়ী সমাধানে জাতীয় সনদপত্র প্রণয়ন করা প্রয়োজন৷ তিনটি ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একমত হতে হবে৷ নিরপেক্ষ সরকার গঠন প্রয়োজন৷ তাতে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে৷ এ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন আইন-কানুন যুগোপযোগী করবে৷নিরপেক্ষ সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের অসঙ্গতি দূর করে দেশের সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এ তিন ক্ষেত্রে জাতীয় সনদপত্র করতে রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিলে সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি৷তিনি আরো বলেন, সিভিল সোসাইটির মাধ্যমে সংলাপের উদ্যোগ নিলে তাও ফলফসূ হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ ুসংলাপের কোনো পরিবেশ নেই৷ কিন্তু রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে সংলাপের বিকল্প নেই৷

ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, বর্তমান সংকট সমাধান ও সংলাপের জন্য খালেদা জিয়াকে এ মূর্হুতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা প্রয়োজন৷তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে হত্যা বন্ধ করতে হবে৷ সকল রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিতে হবে৷ দীর্ঘদিন নয়, ছয় মাসের মধ্যে সংলাপ শেষ করতে হবে৷এ ছয় মাসের মধ্যে কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে না বলে সরকার ও বিএনপি ঐকমত্যে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে৷ বর্তমান সহিংস পরিস্থিতি চলতে থাকলে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এম কে রহমান৷

এম কে রহমান বলেন, এদেশে অনেক আন্দোলন হয়েছে৷ কিন্তু পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যা, জ্বালাও পোড়াও হয়নি৷ আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা এখনই বন্ধ করতে হবে৷ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে ‘কল’ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানে এখনই ঐক্যবদ্ধ হতে কল (আহবান) জানাতে হবে৷ দেরি না করে সিভিল সোসাইটির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি৷সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন মানুষ মারা গেছেন৷ যারা মারা গেছেন, তারা সাধারণ মানুষ কোনো আইনজীবী, রাজনীতিবিদ বা তাদের ছেলে মারা যানানি৷ তাহলে সহিংসতার মূল্য তারা কিভাবে বুঝবেন?

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান সংকটের জন্ম হয়৷ এ সংকটই বর্তমান সহিংসতার মূল কারণ বলে মত দিয়েছেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী৷সুব্রত চৌধুরী বলেন, বিজ্ঞ আইনজীবীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ফায়দা লুটতে পঞ্চদশ সংশোধনী করা হয়েছে৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিলই মূল কারণ৷তিনি বলেন, আবার ক্ষমতায় গিয়ে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান৷ েেয প্রক্রিয়ায় দেশ চলছে, তাতে কোনদিন শান্তি আসবে না৷ যেখান থেকে সমস্যার শুরু হয়েছে, সেখান থেকে সমাধান শুরু না করলে বর্তমান সংকটের কোনদিন সমাধান আসবে না৷ র্যাব, পুলিশ বাহিনী দলবাজি শুরু করেছে৷ এতো বেশি দলবাজি ভালো নয়৷

পারস্পরিক দোষারোপ বাদ দিয়ে সংলাপের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকার ও বিরোধীদলকে আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা৷ আর এ ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে বলেও মনে করেন তারা৷এছাড়া দুই জোটের মধ্যে বর্তমানে যে লড়াই চলছে তা অবাস্তব বলেও মন্তব্য করেন তারা৷এতে বিশিষ্টজনরা আন্দোলন মানে সহিংসতা নয় উল্লেখ করে দুই জোটকে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সংসদীয় ভাষায় কথা বলার আহ্বান জানান৷সহিংসতা দেশের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে পারস্পরিক দোষারোপ ও নাশকতা বন্ধ করে রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধানের কথা বলেন অর্থনীতিবিদরা৷

ড. শাহদীন মালিকের সঞ্চালনায় ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামছুল হুদার সভাপতিত্বে গোলটেবিলে আরো উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবীদ ড. আকবর আলী খান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভনর্র ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌসী, প্রযুক্তিবিদ হাবিবুল্লাহ করিম, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান প্রমুখ৷