দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ এপ্রিল: মহান মে দিবস উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, আজকের এই দিনে রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনে শোচনীয়ভাবে নিহত ভাই-বোনদের কথাও আমি গভীর বেদনার সাথে স্মরণ করছি। শ্রমজীবী মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়। তাদের অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। অথচ গভীর পরিতাপের বিষয় আজও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। “মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এক বানিতে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নির্বাসিত, গণতান্ত্রিক প্রথা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। কাজেই কোন শ্রেণী-পেশার মানুষের অধিকারই আজ আর নিশ্চিত নয়। এই অবস্থার অবসানের জন্য শ্রমজীবীদের প্রতি খালেদা জিয়া আহবান করে বলেন, সাম্য ও সামজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অংশ নিন।
তিনি আরো বলেন, আমি দেশ-বিদেশে কর্মরত সকল বাংলাদেশী শ্রমিক-কর্মচারী এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই এবং তাদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি। এ দিনটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ১৮৮৬ সালে মে’ মাসে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং অন্যায় বিচারে ফাঁসি দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে সেইসব প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ।
বিএনপি চেয়ারপার্সন, ২০ দলীয় জোট প্রধান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুরো বাণীটি দৈনিকবার্তা নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
বাণী
“মহান মে দিবস উপলক্ষে আমি দেশ-বিদেশে কর্মরত সকল বাংলাদেশী শ্রমিক-কর্মচারী এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই এবং তাদের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি। এ দিনটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ১৮৮৬ সালে মে’ মাসে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং অন্যায় বিচারে ফাঁসি দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে সেইসব প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ।
আজকের এই দিনে রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনে শোচনীয়ভাবে নিহত ভাই-বোনদের কথাও আমি গভীর বেদনার সাথে স্মরণ করছি। মহান মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকভাবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। আমরা বিস্মৃত হইনি যে, শ্রমজীবী মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়। তাদের অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। অথচ গভীর পরিতাপের বিষয় আজও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা স¤পর্কে সব সময় ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে কখেনোই পিছপা হইনি।
মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব ও স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি ভাবতেন। এদেশের শ্রমজীবী ও পরিশ্রমী মানুষের কল্যাণে তিনি যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। আমাদের দলের পতাকায়ও তার স্বীকৃতি রয়েছে।
আমরা এদেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে সরকারে থাকাকালে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছি। শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বেতন ও মজুরী কমিশন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরী নির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও তাদের বোনাস প্রাপ্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন এবং শ্রমিক কল্যান ট্রাস্ট গঠন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সন্তানদের চিকিৎসা ও তাদের লেখা পড়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের শ্রমজীবি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও প্রয়োগ করেছি। শ্রমজীবী মানুষের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা আগামীতেও অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। তাদের গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, ন্যায্য মুজুরী এবং স্বাস্থকর ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ অর্জনসহ সকল ন্যায়সঙ্গত দাবী আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ছাড়া শ্রমজীবীসহ কোন শ্রেণী-পেশার মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। আর তাই সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন স্বাভাবিকভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সাথে একাকার হয়ে যায়।
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নির্বাসিত, গণতান্ত্রিক প্রথা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। কাজেই কোন শ্রেণী-পেশার মানুষের অধিকারই আজ আর নিশ্চিত নয়। এই অবস্থার অবসানের জন্য, সাম্য ও সামজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অংশ নেয়ার জন্য এই মহান মে দিবসে আমি দেশের শ্রমজীবী ভাই-বোনদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। মহান মে দিবস অমর হোক।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”
