mongla-bagerhat-thumbnail

দৈনিকবার্তা-মংলা ২৫ জুন: মংলা শহরও শহরতলীর অলি-গলিতে ক্রমশই বাড়ছে মাদকাসক্তদের সংখ্যা। দিনের শেষে সন্ধ্যা নামলেই শহরতলীর অন্ধকার গলিতে শুরু হয় মাদকাসক্তদের অবাধ বিচরণ।চলে রাতভর বিকিকিন ও মাদক সেবনের মহোৎসব। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন মাদক নির্মূলে মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও এ ক্ষেত্রে স্থানীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সদস্যদের ভূমিকা তেমন দেখা যায় না। ফলে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দাপটের কাছে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবার পরিজন নিয়ে দারুন অসহায়।স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মংলার পূর্ব কবরস্থান রোড, কমিশনার হালিম সড়ক, রাতারাতি কলোনী, বালুর মাঠ, ছাড়া বাড়ি, পরিত্যাক্ত পোট হেলথ কমপ্লেক্স, ফেরীঘাট, মাদ্রাসা রোড়, নদী সংলগ্ন বেড়িবাধে গড়ে উঠেছে দেশী (বাংলা) মদ সহ বিদেশী বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ বিয়ার, গাজা, হেরোইন, ফেন্সিডিল ও ইয়াবাসহ হরেক রকম মাদক সেবন ও বিকিকিনির একাধিক আস্তানা। সন্ধ্যা হলেই এ সব স্থান সমূহে শুরু হয় উঠতি বয়সের কিশোর ও মাদকাসক্ত বখাটেদের আনাগোনা। বিশেষ করে মংলার বস্তিগুলোতে বেড়ে চলেছে মাদক আসক্তের সংখ্যা।

সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বস্তির নেশাগ্রস্থ বখাটে ছেলেরা আশেপাশের মহল্লার অন্ধকার সড়কে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে মাদক সেবন এছাড়াও দলবদ্ধ ভাবে ঘুরে বেড়ায়। শহরে একটি দেশী (বাংলা) মদ ও একটি কেরু কোম্পানীর লাইসেন্সধারী দোকান থাকলেও এর বাইরেও চলছে অবৈধ মদ বিচিকিনির রমরমা কারবার। শহরতলীর কাইন নগরের বাইদ্যা পাড়া এলাকায় গড়ে ওঠেছে বিদেশী মাদকের বড় আস্তানা। বিদেশী বিভিন্ন জাহাজ থেকে সংঘবদ্ধ মাদক পাচারকারীরা বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ ও বিয়ার জাহাজ থেকে নামিয়ে এনে এখানে মজুদ করে রাখে। পরে সুবিধা মতো সময়ে তা মংলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে দেয়। এ ছাড়া শহরের কয়েকজন প্রভাবশালী যুবক ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে।

খুলনা থেকে এসব ইয়াবা মংলায় এনে তা যুবকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে দিগরাজ বাজার এলাকায় গড়ে ওঠেছে সংঘবদ্ধ ফেন্সিডিল পাচারকারীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র। বিভিন্ন জায়গা থেকে সুন্দরবনের নৌ পথ দিয়ে ফেন্সিডিল পাচার করে এনে তা এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এদিকে সংঘবদ্ধ মাদক আসক্ত ও বখাটেদের দাপটের কাছে এলাকাবাসী অসহায়। কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না তাদের ভয়ে। বিভিন্ন সময় স্থানীয় প্রশাসনকে এলাকাবাসী জানালেও কোন সুফল মেলেনি। উল্টো মাদকাসক্তদের তৎপরতা দিনকে দিন বেড়েই চলছে।মংলা থানা পুলিশ মাদক ও মাদকসেবী দমনে প্রায়ই অভিযান চালায়। এসব অভিযানে মাদকসহ মাদকসেবীদের আটক করে আদালতে প্রেরণ করলেও তারা আইনের ফাক ফোকর দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।

অপরদিকে শহরে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি অফিস থাকলেও তাদের মাদক নিমর্ৃূলে তেমন বড় ধরনের কোন অভিযানের খবর পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো দু চার পুরিয়া গাজা ও সেবনকারী আটক ছাড়া সাম্প্রতিককালে তাদের বড় ধরনের কোন উদ্ধার বা আটকের ঘটনা নেই। যা নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন ও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।এ ব্যাপারে মংলা থানার ওসি মো: বেলায়েত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাদক বিকিকিনি ও আসক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের অব্যাহত অভিযান চলছে। অপরদিকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মংলা সার্কেলের পরিদর্শক জাফরুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে নিস্ক্রীয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লোকবল ও যানবাহনের সংকটের কারণে তাদের অভিযানে বেগ পেতে হয়। তার পরেও তারা মাদক দমনে তৎপর রয়েছেন।