অকটেন- পেট্রোলের দাম ১০, ডিজেল-কেরোসিনে কমলো ৩ টাকা

ডিজেল- কেরোসিনের দাম ৩ টাকা, অকটেন- পেট্রোল ১০ টাকা কমেছে ।ফার্নেস অয়েলের দাম কমানোর ২৩ দিন পর অন্য সব জ্বালানি তেলের দামও কমিয়েছে সরকার।ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে তিন টাকা, অকটেন ১০ টাকা, পেট্রোল ১০ টাকা ও কেরোসিন তিন টাকা কমানো হয়েছে।জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে পুননিরর্ধারিত এই দরের উল্লেখ রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন জানিয়েছেন।বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, রোববার মধ্যরাত থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের সময় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এরপর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ব্যাপক দরপতনে সব মহল থেকে দাবি উঠলেও বাংলাদেশ সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমাচ্ছিল না। সেজন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এতদিনের ভর্তুকির লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার যুক্তি দেখানো হয়।এরপর গত ৩১ এপ্রিল ফার্নেস তেলের দাম প্রতি লিটার ৬০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। সেই সিদ্ধান্তের পর ৪ এপ্রিল জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অন্য সব জ্বালানি তেলের দামও ১০ দিনের মধ্যে কমানোর প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন হল ১৯ দিন পর।জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলে পরিবহন ভাড়াও সেই হারে কমানো হবে বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতিশ্র“তি রয়েছে।বাংলাদেশে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও যানবাহন বৃদ্ধির কারণে গত কয়েক বছর ধরে ৫০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি জ্বালানি তেলের চাহিদা তৈরি হয়েছে; যার মধ্যে প্রায় সবই আমদানি করতে হয়।বাংলাদেশকে এখন পেট্রোল আমদানি করতে হয় না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল বলছেন, সরকার অকটেনও আর আমদানি করতে চায় না। সূত্র জানিয়েছে, অকটেন ও পেট্রোলে লিটারপ্রতি কমছে ১০ টাকা, সেই হিসাবে এই দুই জ্বালানি তেলের দাম হবে যথাক্রমে ৮৯ ও ৮৬ টাকা। আর ডিজেল ও কেরোসিন দাম কমবে লিটার প্রতি ৩ টাকা, সেই হিসাবে বাজারদর হবে ৬৫ টাকা লিটার। দেশের বাজারে বিপিসি বিক্রি করছে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯, পেট্রোল ৯৬, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যেখানে,আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ২০১৪ সালের জুন থেকে। কিন্তু দেশে এখন পর্যন্ত দাম না কমানোয় গত দুই বছর ধরে লাভ করছে বিপিসি।আন্তর্জাতিক বাজারের বর্তমান দাম (অপরিশোধিত প্রতি ব্যারেল বা ১৫৯ লিটার) অনুযায়ী প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েল বিপিসি কিনছে ৩০ টাকায়, অকটেন ৫৫ টাকায় ও পেট্রল ৫০ টাকায়। ডিজেল আর কেরোসিন কিনছে ৩৮ টাকায়। কম দামে কিনে দেশে বেশি দামে বিক্রি করায় গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি ৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরমধ্যেই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। এ তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালী ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল।