gazipur-1-31-october-2016-court-judgement-1

গাজীপুরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাক প্রতিবন্ধি এক নারীকে একাধিকবার ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। সোমবার দুপুরে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক সৈয়দ জাহেদ মনসুর এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় তৌহিদুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দ-প্রাপ্তের নাম তৌহিদুল ইসলাম (৩২)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা পূর্বপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের ছোট ছেলে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জন্ম থেকেই বাক প্রতিবন্ধি ভিকটিম ওই নারী (২৫) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূর্বচান্দনা এলাকার বাসিন্দা। তিনি দর্জি কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে পার্শ্ববর্তী সার্ডি এলাকায় বড় ভাইয়ের একটি লেডিস টেইলার্সে সেলাইয়ের কাজ করতেন। তাদের বাসা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায়শঃ আসা যাওয়া করতো ভাইয়ের বন্ধু তৌহিদুল। এক পর্যায়ে ওই প্রতিবন্ধি নারীর (ভিকটিম) সঙ্গে তৌহিদুল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তৌহিদুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারী সঙ্গে ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন সময় একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। এতে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে চিকিৎসার কথা বলে একই বছরের ২১ নবেম্বর স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে শহরের শিববাড়ির একটি ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়। এতে ভিকটিম আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ভিকটিমের পরিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ইশারা-ইঙ্গিতে সব ঘটনা জানায়। বিষয়টি তৌহিদুল ইসলামের বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা উল্টো মেয়ের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায় এবং ভিকটিমকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।

এঘটনায় প্রতিবন্ধি মেয়েটির মা বাদী হয়ে ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি জয়দেবপুর থানায় তৌহিদুল ইসলাম, ভাই আশরাফুল আলম, বাবা মতিউর রহমান ও তৌহিদুল ইসলামের মা’কে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে মামলায় প্রধান আসামী তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী ও উভয় পক্ষের স্বাক্ষী গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক সোমবার দুপুরে ওই রায় প্রদান করেন।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।