jamat

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮নভেম্বর: মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানসহ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি৷

শনিবার দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতির মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী ও মো. কামারুজ্জামানের মৃতু্যদণ্ডে টানা হরতালের পর শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতির মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়৷বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে৷ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে, নিজেদের দলীয় লোকদের দিয়ে মিথ্যা স্বাক্ষ্য প্রদান করে তাকে মুতু্যদণ্ডে দণ্ডিত করার ব্যবস্থা করেছে৷ সরকার একে একে জামায়াত নেতাদেরকে হত্যার যে পরিকল্পনা নিয়েছে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার অস্থির হয়ে পড়েছে৷

আইন, আদালত ও সংবিধানের তোয়াক্কা না করে ফাঁসি কার্যকরের নামে কামারুজ্জামানকে হত্যা করার জন্য সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে৷ সরকারের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের প্রতি ফাঁসির দণ্ড স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে৷ তিনি বলেন, কামারুজ্জামানকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে৷ আমরা আশাকরি সরকার চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও হত্যার রাজনীতি পরিহার করে এই মুহূর্তে কামারুজ্জামানকে মুক্তি দেবে৷

এদিকে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দেয়ায় রোববার রাজধানী ঢাকাসহ জেলা ও প্রতিটি থানা পর্যায়ে প্রতিবাদী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি৷রোববার এই বিক্ষোভের কর্মসূচি ডেকে তা শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য দেশজুড়ে দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান৷

কামারুজ্জামানসহ দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে এবং তাদের মুক্তির দাবিতে আমি রোববার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করছি৷গত ৩০ অক্টোবর দলীয় আমির নিজামীকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবু্যনাল মৃতু্যদণ্ড দিলে জামায়াত তিন দিন হরতালের ডাক দেয়৷ এরপর কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেমের মৃতু্যদণ্ড হলে আরেকদিন হরতাল ডাকে তারা৷এর মধ্যে আপিলের চূড়ান্ত রায়ে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের মৃতু্যদণ্ড বহাল থাকলে আরও একদিন হরতাল ডাকা হলে পুরো সপ্তাহই হরতালের মধ্যে পড়ে৷

দূর পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ এবং পরীক্ষা পেছানো ছাড়া এই হরতালের প্রভাব জনজীবনে খুব একটা দেখা যায়নি৷ এই প্রেক্ষাপটেই নতুন কর্মসূচি হিসেবে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে দলটি৷যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতাকারী দলটির নেতা শফিকুর বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার জনগণের মতামত ও বিশ্ব সমপ্রদায়ের অভিমত অগ্রাহ্য করে কামারুজ্জামানকে হত্যার যে পরিকল্পনা নিয়েছে আমরা এই মুহূর্তে তা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি৷আমরা আশা করি সরকার চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও হত্যার রাজনীতি পরিহার করে এই মুহূর্তে জনাব কামারুজ্জামানকে মুক্তি দিবেন৷

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতের শীর্ষনেতাদের সবাই যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন৷ একাত্তরে দলটির আমির গোলাম আযম কারাভোগের মধ্যে মারা গেছেন৷ কারাভোগ করছেন নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী৷ জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদকে মৃতু্যদণ্ড দিয়েছে ট্রাইবু্যনাল৷ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার আপিলের রায়ের পর তার সাজা মৃতু্যদণ্ড গত বছরের ডিসেম্বরে কার্যকর হয়েছে৷ তারপরের ব্যক্তি হিসেবে গত সপ্তাহে মৃতু্যদণ্ডের চূড়ান্ত রায় আসে কামারুজ্জামানের৷

কামারুজ্জামানের সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ইতোমধ্যে মন্ত্রীরা জানিয়েছেন,যা নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল৷সরকার একে একে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে৷ আইন, আদালত ও সংবিধানের তোয়াক্কা না করে ফাঁসি কার্যকরের নামে কামারুজ্জামানকে হত্যা করার জন্য সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে৷কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলেও দাবি করেছে জামায়াত, যদিও একাত্তরে ময়মনসিংহ অঞ্চলের এই আল বদর নেতার নিরীহ মানুষ হত্যায় নেতৃত্ব দেওয়ার প্রমাণ বিচারে মিলেছে৷