2015-08-21_4_261334

দৈনিকবার্তা-গোপালগঞ্জ, ২১ আগস্ট: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা গ্রামের রইচ শেখের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করা হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউট উদ্ভাবিত আগাম ও খরাসহিষ্ণু বোনা আউশ ধানের ব্রি ধান ৪৩ জাত। নতুন উদ্ভাবিত এ জাতটিতে অধিক ফলন হওয়ায় ও পবর্তীতে আমন চাষ করায় আগামীতে এ জাতটি আবাদ করবেন বলে জানিয়েছে কৃষকরা। তবে নতুন এ জাতটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবে মনে করছে গবেষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, খড়ার কথা বিবেচনা করে কৃষকদের জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্স্টিটিউট ব্রি-৪৩ জাতের ধান উদ্ভাবন করে। তাদের উদ্ভাবিত এ জাতের ধানটি কৃষকদের কাছে পৌছে দিতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় পরীক্ষমূলকভাবে চাষ করা হয়। খরাসহিষ্ণু বোনা আউশ ধানের জাতটি অন্যান্য ধানের তুলনা অল্প দিনে ধান পাকায় ও অধিক ফলন হওয়ায় খুশি কৃষকরা।

ব্রি’র গবেষকদের উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৪৩ জাতটি ছিটিয়ে, সারি করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। হেক্টর প্রতি অন্ত:ত সাড়ে ৩ টনেরও বেশি ফলন দিতে সক্ষম। আর ১৫-২০ দিন আগেই ফসল ঘরে তোলা যাওয়া একদিকে যেমন কৃষকদের সময়, সার ও ডিজেল বেঁচে খরচ কমবে অন্যদিকে প্রাকৃতিক ঝুঁকিও কমে আসবে। নতুন জাতের এ ধান চাষ করলে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে।এদিকে কৃষকদের এ জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাঁটা ও মাড়াই করে এর উৎপাদনের পরিমান দেওখা হয়েছে। এ উলক্ষে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.সমীর কুমার গোস্বামী। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফরিদপুরের ভাঙ্গা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আমির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মোঃ মনিরুজ্জামান, ব্রি ভাঙ্গা কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী মোঃ তারেক আজিজ, কৃষক রইচ শেখ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

এ জাতের ধান চাষী নিলফা গ্রামের কৃষক রইচ শেখ জানান, তিনি ১৩ কাঠা জমিতে এ জাতের ধান চাষ করে প্রচন্ড খরা থাকা সত্বেও ভালো ফলন পেয়েছে। অন্য জাতের হলে ফলন ভাল হতো না। তিনি আগামী বছর আরো বেশী পরিমান জমিতে এ জাতের ধানের চাষ করবেন এবং এলাকার অন্য কৃষকদেরকেও এ জাতের ধানের চাষ করার জন্য আহবান জানান।গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, এ জাতের ধান এ অঞ্চলের কৃষকের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাবে। ধান কাটার পর কৃষকরা অন্য ফসলও ফলাতে পারবে। তিনি এ জাতের আউশ ধান চাষের জন্য কৃষকদেরকে এগিয়ে আসতে বলেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনিষ্টিটিউটের ফরিদপুরের ভাঙ্গা আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আমির হোসেন বলছেন, ব্রি ধান ৪৩ বোনা আউশ ধানের একটি জাত। এটি একটি আগাম ও খরাসহিষ্ণু জাত। তিন ভাবে বীজ বোনা যায়- ছিটিয়ে, সারি করে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে। ব্রি ধান ৪৩ দেশের খরাপ্রবণ এলাকায় বপনযোগ্য ধান । জাতটির জীবন কাল মাত্র ১০০ দিন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে ব্রি ধান ৪৩ হেক্টর প্রতি ৩.৫ টন ফলন দিয়ে থাকে।