inu-1425119179

সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল ইনু বলেছেন, ‘আপনারা সরকারের সমালোচনা করুন, ভুল ধরিয়ে দিন। কিন্তু খলনায়ক হবেন না। আমরা পোষা সাংবাদিক চাই না। সরকাে রে দালাল চাই না।বাংলাদেশের প্রথম গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন শুরু হয়েছে।অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম জাতির বিবেক তৈরি করে। আবার বিবেক পাহারাও দেয়। গণমাধ্যম উন্নয়নযাত্রার প্রধান অনুঘটক। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভালো-মন্দকে একপাল্লায় মাপবেন না। রাজাকার আর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে কোনো ভারসাম্য বজায় রাখার দায়িত্ব গণমাধ্যমের নয়। আপনি জঙ্গিবাদী নেত্রী আর গণতান্ত্রিক নেত্রীকে এক পাল্লায় মাপবেন না। আপনি বস্তুনিষ্ঠ হোন কিন্তু ব্যালেন্স করবেন না। খ-িত তথ্য, ইতিহাস বিকৃত করবেন না।হাসানুল হক ইনু বলেন, রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা খলনায়ক বা খলনায়িকা হন। কিন্তু গণমাধ্যমের সেই সুযোগ নেই। আপনারা গণমাধ্যম হিসেবে সব সময়ই গণতন্ত্রের ও উন্নয়নের স্নেহময়ী মাতা হিসেবে আমাদের শাসন করবেন, আদর করবেন।তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গণমাধ্যমের প্রতিপক্ষ নয়। বরং গণমাধ্যমের সঙ্গে হাত ধরে গণতন্ত্র সামনের দিকে এগিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ভুল করলে সমাজ ও গণমাধ্যম শুধরে দেয়। কিন্তু যারা অভিভাবকদের পাহারা দেয়, সেই পাহারাদাররা যদি ভুল করে, গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র একসঙ্গে ধ্বংস হয়। সুতরাং গণমাধ্যমের কর্মী হিসেবে আপনার ভুল করার কোনো অধিকার নেই। আপনাদের সব সময়ই অতন্দ্রপ্রহরীর মতো সজাগ থাকতে হবে।তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা কিছু জঞ্জাল পেয়েছি। সামরিক শাসনের জঞ্জাল, উপনিবেশের জঞ্জাল, সাম্প্রদায়িকতার জঞ্জাল। সুতরাং জঞ্জাল পরিষ্কার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এর আগে সকালে বাংলাদেশের প্রথম গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা সম্মেলনের উদ্বোধন করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠতা রক্ষার কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আজ মঙ্গলবার সম্মেলনে উপাচার্য এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

সম্মেলন উদ্বোধন করে উপাচার্য বলেন, একটি রাষ্ট্রে গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে হবে। দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করতে হবে। উপাচার্য বলেন, বর্তমান যুগে কে কার আগে সংবাদ দেবে, সেই প্রতিযোগিতা চলে। সংবাদ আগে দেওয়ার চেষ্টা করা ভালো কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে কোনোভাবেই ভুল করা যাবে না। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে একটু পরে হলেও সঠিক সংবাদ প্রকাশ করা যেতে পারে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাস তুলে ধরেন প্রধান তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ফরিদ উদ্দিন, সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান সাখাওয়াত আলী খান, বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান।