ছেচল্লিশ বার সময় নিয়েও সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব) কর্মকর্তা এএসপি মহিউদ্দিন আহমেদকে তলব করেছে আদালত।

বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলাম এ আদেশ দেন।তিনি বলেন, কেনো এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া গেলো না তদন্ত কর্মকর্তাকে তা আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে। সেইসঙ্গে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ২১ মার্চ নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন বিচারক।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি ভোরে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের একটি ৫তলা ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়।চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের পর রুনির ভাই শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ৫ বছর ধরে এ মামলার তদন্ত করছে র‌্যাব। ওই বাসায় বাবা-মায়ের লাশের সঙ্গে শুধু তাদের শিশু সন্তান মাহির সরওয়ার মেঘকেই পাওয়া গিয়েছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অপেশাদার খুনিরা ধারাল অস্ত্রের আঘাতে দুজনকে হত্যা করেছে।তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার সামনে বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে; যা না ঘটার পর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। থানার হাত ঘুরে তদন্তের দায়িত্ব যায় ডিবিতে। ৬২ দিন পর ডিবি আদালতের কাছে ব্যর্থতা স্বীকার করলে তদন্তের দায়িত্বে আসে র‌্যাব। পাঁচ বছরেও তারা ওই ঘটনার মীমাংসা করতে পারেনি।আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, এ নিয়ে ৪৭তম বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় পেল র‌্যাব।এ মামলায় গ্রেপ্তার ছয়জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এরা হলেন- সাগর-রুনি যে বাড়িতে থাকতেন ওই বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও আবু সাঈদ। অন্যদিকে তানভীর রহমান ও ওই বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া জামিনে রয়েছে।গ্রেপ্তার এই আসামিদের একাধিকবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।