আওয়ামী লীগ তাদের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ-সম্পদ রক্ষা করতেই জোর করে ক্ষমতায় থাকার ‘নীলনকশা’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধব নয়। শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।মহান মে দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে রাজধানীতে বিএনপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত শোভাযাত্রার আগে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়।শোভাযাত্রার আগে দেওয়া বক্তব্যে মির্জা ফখরুল দাবি করেন, সারা দেশে শ্রমিকেরা ন্যায্য অধিকার পাচ্ছেন না। সংগঠন করায় শ্রমিকদের নির্যাতন করা হচ্ছে।

ফখরুল ইসলাম বলেন, উনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, আজ যে রোজগার করছেন তারা, আয় করছেন, সেই আয় নিয়ে পালাতে পারবে না যদি তারা ক্ষমতায় না থাকেন। আজকে তারা স্বীকার করে নিয়েছেন, যে তারা অবৈধ উপায়ে অর্থ উপাজর্ন করছে, তাদেরকে জোর করে হলেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। সেজন্য তারা এসব বলার চেষ্টা করছেন। আমি তার বক্তব্যের ধিক্কার জানাই।তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, দেশের জনগণ সেটা (জোর করে ক্ষমতায় থাকা) কখনোই মেনে নেবে না। অবশ্যই তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন হতে দেবে না।প্রসঙ্গত, শনিবার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পাওয়ার, ক্ষমতা বেশি দিন থাকে না। অনুরোধ করি, ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। এটা আমানত। টাকা পয়সা বেশি দিন থাকবে না।তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে টাকা-পয়সা নিয়ে পালাতে হবে। তা কি ভাবেন না? দল যদি ক্ষমতায় না থাকে, এখন যে টাকা- পয়সা রোজগার করছেন, তখন এই টাকা নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। এটা ভাবতে হবে।নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সকাল পৌনে ১১টায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মে দিবসের শোভাযাত্রা বের করে যা শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবি সম্বলিত নানা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শতাধিক নেতা-কর্মী এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।শ্রমিকদলের এই শোভাযাত্রায় ব্যান্ড সঙ্গীত দল ছাড়া শ্রমিকরা লালসহ নানা রঙের গেঞ্জি ও নীল ক্যাপ পরিধান করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আজকে সমগ্র বাংলাদেশে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে না, তারা নির্যাতিত হচ্ছে শুধু শ্রমিক সংগঠন করার কারণে।তনি বলেন, শ্রমিকদের অধিকার আদায়েরর জন্য জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য শ্রমিক ভাইদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে, অর্জন করে নিতে হবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। শ্রমিক ঐক্য জিন্দাবাদ।সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেন, আজো শ্রমজীবী মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পায়নি। তাদের কর্মক্ষেত্র নিরাপদ নয়। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ কর্মক্ষেত্রে মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন শিপইয়ার্ডে আমাদের শ্রমিকরা মারা যাচ্ছে।তিনি বলেন, আজো শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরী পাচ্ছে না, জাতীয় মজুরী কমিশন ঘোষণা করা হয় নাই। আজো শ্রমজীবী মানুষের যে আইন, কর্মক্ষেত্র গণতান্ত্রিক না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।এই শোভাযাত্রায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ, মেহেদি আলী খান, মোস্তাফিজুল করীম, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, আসাদুজ্জামান বাবুল প্রমুখ নেতা অংশ নেন।এছাড়া মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, সহ সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু প্রমুখ নেতারাও ছিলেন।