ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থাপনায় বেড়েছে ব্যস্ততা। অতিরিক্ত যাত্রী মোকাবেলায় লঞ্চ, বাস ও রেল খাতে যোগ হচ্ছে স্পেশাল সার্ভিস। পাশাপাশি চলছে পুরনো বাস ও লঞ্চ মেরামত করে ঘষামাজার কাজ। শ্রমিকরা বলেন, ফিটনেসের কড়াকড়ি থেকে রেহাই পেতে এ ব্যবস্থা। তবে পরিবহন মালিকদের দাবি, ঈদ যাত্রা নির্বিঘœ করতেই এমন উদ্যোগ।

এদিকে,বিআইডব্লিউটিএয়ের চেয়ারম্যান কমোডর মোজাম্মেল হক বলেন,ঈদে সদরঘাট থেকে ফিটনেসবিহীন কোনো নৌযান চলবে না। বরবারের মতো এবারও রাজধানীবাসী ঈদে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অগ্রিম টিকিটের জন্য প্রতিদিন ছুটছেন রেল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ মোকাবেলায় সরকারও নিয়েছে নানা উদ্যোগ। এবার ঈদে রেল যাত্রীদের জন্য নিয়মিত ট্রেনের পাশাপাশি চালু হচ্ছে ৬টি স্পেশাল ট্রেন। ট্রেনের পাশাপাশি নগরবাসীর একটি বড় অংশই বাসে করে বাড়ি ফেরেন। ঈদকে সামনে রেখে সরকারি – বেসরকারি কোম্পানির বাস মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

বিভিন্ন গ্যারেজে বাস মেরামতের কাজ চলছে পুরোদমে। ফিটনেসের হাত থেকে রক্ষা পেতেই এমনটা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ঈদ উপলক্ষে নৌপথেও যোগ হচ্ছে ছয়টি নতুন লঞ্চ। তবে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ডর্কইয়ার্ডে পুরোনো লঞ্চ ঘষেমেজে নতুন করার কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। শ্রমিকরা জানান, সার্ভেয়ারের ফিটনেস সার্টিফিকেট পেতেই এ পন্থা। তবে লঞ্চ মালিক সমিতি এ কথা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, উৎসবের কথা বিবেচনা করেই এমনটা করা হয়। আর যাত্রীদের বাড়ি ফেরা নির্বিঘœ করতে তারা নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। এদিকে, বিআইডব্লিউটিএ বলছে, সদরঘাট থেকে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ ও জাহাজ চালানোর কোনো সুযোগ নেই। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২২ জুন থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথগুলোতে বিশেষ ঈদ সার্ভিস শুরু করবে।বিআইডব্লিউটিসি ১৫ জুন থেকে অনলাইনে আগাম টিকিটের জন্য যাত্রীদের আবেদন নেওয়া শুরু করে। ২২ জুন থেকে বিশেষ সার্ভিস শুরুর দিনই আবেদনকারী যাত্রীদের টিকিট বিতরণ শুরু হবে। এবারের ঈদে রাষ্ট্রীয় নৌপরিবহন সংস্থার মোট ছয়টি নৌযান ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন পথে যাত্রী পরিবহন করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির কর্মকর্তারা।সংস্থার বরিশাল কার্যালয় সূত্র জানায়, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-বরিশাল-মোরেলগঞ্জপথে বিআইডব্লিউটিসির নিয়মিত চারটি নৌযান যাত্রী পরিবহন করে। ঈদ উপলক্ষে এই পথে অতিরিক্ত আরও দুটি নৌযান যুক্ত হবে। দুটি পথে মোট ছয়টি নৌযান যাত্রী পরিবহন করবে। এসব নৌযান হলো পিএস মাহ্সুদ, পিএস অস্ট্রিচ, পিএস লেপচা, পিএস টার্ন, এমভি মধুমতি এবং এমভি বাঙ্গালী। ঢাকা-বরিশাল এবং ঢাকা-বরিশাল-মোরেলগঞ্জ রুটে চলাচল করবে এসব নৌযান।ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের টিকিট বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ১৫ জুন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিটের আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে।আবুল কালাম আজাদ আরও জানান, ‘ঈদে সংস্থার নিয়মিত চারটি জাহাজের পাশাপাশি আরও দুটি জাহাজ বিশেষ সার্ভিস দেবে। ২২ জুন থেকে শুরু হবে অগ্রিম টিকিট বিক্রি। ওই দিন থেকেই ঈদের বিশেষ সার্ভিসও শুরু করবে বিআইডব্লিউটিসি।’ ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।