চার জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সবার মৃত্যু হয়েছে গুলিতে। আজ শুক্রবার ভোর ও গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এসব ঘটনা ঘটে।

কুমিল্লা : তিতাস উপজেলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন দুই ডাকাত নিহত হয়েছেন।পুলিশ জানায়, গোলাগুলিতে তাদের অন্তত চার সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় আরো পাঁচ ডাকাতকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তর মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, ডাকাতির প্রস্তুতি চলছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিতাসের নারায়ণপুর কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা গুলি ছোড়ে, আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে আল আমিন ওরফে কাওসার ও এরশাদ নামের দুই ডাকাত নিহত হন। এ সময় আহত হন গোয়েন্দা পুলিশের শহীদ, কামাল ও সুমনসহ চারজন। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

টাঙ্গাইল : মধুপুর উপজেলায় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে মাসুদ রানা ফরিদ (৪২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ছিলেন। উপজেলার জলছত্র মাগন্তিনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ফরিদ পুলিশের মাদকের তালিকাভুক্ত আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহাদুজ্জামান মিয়া জানান, ভোরে মধুপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল অরণখোলা ইউনিয়নের জলছত্র মাগন্তিনগর এলাকায় দুই দল মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে মাদক বেচাকেনা ও টাকার বাটোয়ারা হচ্ছিল। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিরোধ হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ফরিদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। অরণখোলা ইউনিয়নের কাকরাইদ গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা ফরিদ। তাঁর বিরুদ্ধে মধুপুর থানায় পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে।

রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে লালন হালদার (৪২) নামের একজন নিহত হয়েছেন।নিহত লালনের বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) মো. ফজরুল করিম জানান, লালন চরমপন্থী জুলহাস বাহিনীর সদস্য। লালনের বিরুদ্ধে পাংশা ও সুজানগর থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের চারটি মামলা আছে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় একদল চরমপন্থী বৈঠক করছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে পাংশা থানা পুলিশ গতকাল রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লালনকে পুলিশ উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটা ওয়ান শুটারগান ও ছয়টি গুলি উদ্ধার করে।

পাবনা : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হযরত আলী (৪২) নামের এক ‘ডাকাত সর্দার’ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় র‌্যাব সদস্য হাবিলদার আবদুল হাসান, এপিসি মো. শাহজাহান মৃধা ও সৈনিক আল-আমিন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। উল্লাপাড়া উপজেলার পাইকপাড়া শ্মশানঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হযরত আলী উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের পংখারুয়া গ্রামের বাসিন্দা। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি শুটার গান, ১৪টি কার্তুজ, একটি কুড়াল, একটি হাঁসুয়া ও পিস্তলের তিনটি গুলি উদ্ধারের কথা জানানো হয়েছে।

র‌্যাব-১২ স্পেশাল কোম্পানি সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাকিবুল ইসলাম খান জানান, একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল উপজেলার পাইকপাড়া শ্মশানঘাট এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে ডাকাতদল পিছু হটে। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ডাকাত সর্দার হযরত আলীকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় র‌্যাব সদস্য হাবিলদার আবদুল হাসান, এপিসি মো. শাহজাহান মৃধা ও সৈনিক আল-আমিন আহত হয়েছেন। নিহত ডাকাত সর্দার হযরত আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ ১২টি মামলা রয়েছে।