inu_132870

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ এপ্রিল: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী হিসেবে তুলে ধরে ঘরের ভেতরে বসে থাকাই তার জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।তিনি বলেছেন, বেগম জিয়ার হাতে রক্তের দাগ, পিঠে দুর্নীতির ছাপ, শরীরে পোড়া মানুষের গন্ধ, ইতিহাস বিকৃতি আর মিথ্যাচারের রানী। রাজনীতিতে তিনি থাকবেন কি থাকবেন না সে সিদ্ধান্তের আগে এখন তাকে বলবো, কথায় কথায় বিদেশীদের কাছে ধর্না দেবেন না, তওবা করুন, জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিচারের জন্য প্রস্তুত হোন।

বৃহস্পতিবার সকালে তথ্য অধিদপ্তর সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।সাম্প্রতিক সময়ে ইতিহাসের জঘন্য আগুনসন্ত্রাসের পর বেগম খালেদা জিয়া খোলস, বেশভূশা ও ভোল পাল্টে নিজেকে আবারও রাজনীতিতে হালাল করার এক দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকা-ে লিপ্ত হয়েছেন- এ কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,বেগম জিয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধ করছেন এবং এ যুদ্ধে তিনি বেছে নিয়েছেন ইতিহাসের নির্মমতম অমানবিক, জঘন্য কৌশল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যানের মুখে পরাজিতপ্রায় পলায়নপর খালেদা জিয়া তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ওনার (খালেদা) শেষ রক্ষার হাতিয়ার, ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ খুঁজছেন। সাপের মতো খোলস পাল্টে, রঙ পাল্টিয়ে জনগণের মধ্যে আসার কৌশল নিয়েছেন। কিন্তু ওনার (খালেদা জিয়া) বিষদাঁত রয়েই গেছে। উনি শক্তি সঞ্চয় করছেন, দম ফেলার সুযোগ নিচ্ছেন আবার ছোবল হানার জন্য। সিটি নির্বাচনে প্রচারাভিযানে নেমেই বেগম জিয়া মিথ্যাচার শুরু করেছেন। ইতোপূর্বেও বলেছি, মিথ্যাচার খালেদা জিয়ার পুরনো যুদ্ধাস্ত্র।তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মিথ্যাচারকে শিল্পে পরিণত করেছেন। তিনি ব্যবহার করেছেন বর্বরতম আগুন সন্ত্রাস-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের কৌশল। তার বর্বরতায় বাংলার বাতাসে এখনও পোড়া লাশের গন্ধ। তিনি শুরু করেছেন শেখ হাসিনার সময় নাকি ঢাকায়-চট্টগ্রামে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর কী হতে পারে ?তথ্যমন্ত্রী বলেন,এত কিছুর পরও যারা খালেদাকে সমর্থন দিচ্ছেন বা খালেদা যাদের সমর্থন দিচ্ছেন বা যারা খালেদার সমর্থন নিচ্ছেন, তারা সবাই আগুনসন্ত্রাসী বা আগুন সন্ত্রাসের সমর্থক। তারা বাংলাদেশটাকে আগুনে পুড়িয়ে ভস্ম করতে চায়।

মন্ত্রী বলেন,আমি বলবো না যে, সরকার সবকিছুই ভালো করছে। শাসন-প্রশাসনে ত্রুটি-বিচ্যুতি-ব্যর্থতা থাকতে পারে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে সমালোচনা-নিন্দা-ক্ষোভও থাকতে পারে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যারা দেশের ভালো চান, তাদের কখনই এটা ভাবা ঠিক নয় যে, শেখ হাসিনার শাসনের চেয়ে আরও ভালো শাসন উপহার দিতে পারবে খালেদা জিয়া। ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা ও তার পুত্ররা প্রমাণ করেছে, তারা দুর্নীতিবাজ-লুটেরা, বিদেশে অর্থসম্পদ পাচারকারী, জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা। বিরোধী দলে থেকেও প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্রবিরোধী বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিরোধী, জনগণবিরোধী। তাই শেখ হাসিনার বিকল্প হতে পারে না দুর্নীতিবাজ-জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গী-আগুন সন্ত্রাসের রানী খালেদা।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও বেগম জিয়া ছিলেন দেশ পরিচালনায় চরম ব্যর্থ। বিদ্যুতের অভাবে দেশ অন্ধকারে ডুবে ছিল তখন, ছিল খাদ্যাভাব, ছিল না নিরাপদ পানি, গড়ে ওঠেনি কোনো অবকাঠামো। তবে দুর্নীতিতে তিনি চ্যাম্পিয়ন। দুর্নীতিকে সিন্ডিকেটের রূপ দিয়ে তিনি উপহার দিয়েছেন হাওয়া ভবন। দিয়েছেন ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা জঙ্গিবোমার কারখানা। জঙ্গিবোমাবাজদের মাঠে ছেড়ে দিয়ে তিনি শহীদ মিনার ভাঙা, পীরের মাজার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সিনেমা হলে বোমা হামলা করিয়েছেন। খুনীদের দিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করিয়ে গ্রেনেড হামলায় কেড়ে নিয়েছেন বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধাসহ একুশটি প্রাণ। তার খুনীরা আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ এএমএস কিবরিয়া, হুমায়ুন আজাদসহ কত প্রাণ যে কেড়ে নিয়েছে, তার হিসেব আমরা ভুলিনি। ঠিক সেই ধারা তিনি রক্ষা করেছেন ক্ষমতার বাইরে থেকেও। এবার আগুনসন্ত্রাসীদের দিয়ে পুড়িয়ে মারলেন শত মানুষ; কিন্তু তবুও সফল হলো না তার অবরোধ-হরতাল।শেখ হাসিনার সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রামে কোনো উন্নয়ন হয়নি খালেদা জিয়ার এই মিথ্যা প্রচারণার জবাবে তথ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পরিচালনায় ঢাকা-চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের চিত্র সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেন।