বিচারপতি মানিকের বিচারিক মর্যাদা প্রত্যাহার চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিচারিক মর্যাদা (জাজশিপ) প্রত্যাহার চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি আবেদন করা হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গিয়ে আবেদনটি দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মোজাম্মেল হক।জাজশিপ প্রত্যাহার বলতে এ আইনজীবী বুঝিয়েছেন, বিচার বিভাগের প্রয়োজনে কোনোদিন যেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক মামলা নিষ্পত্তি করতে বেঞ্চে বসতে না পারেন।

আর্মি অফিসাররা অবসরে গেলে তার দায়িত্ব কর্তব্য যেমন শেষ হয় না, তেমনি কোনো বিচারপতি অবসরে গেলে তার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না উল্লেখ করে এ আইনজীবী আরো বলেন, যেকোনো বিচারপতি অবসরে যাওয়ার পরও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে প্রধান বিচারপতি মনে করলে তাকে বিচারিক কাজে নিয়োগ দিতে পারবেন। কিন্তু এই বিচারপতি যেন কোনোদিন তার নামের আগে বিচারপতির পদ ব্যবহার না করতে পারেন, পাশাপাশি কোনো সুযোগ সুবিধাও যেন না নিতে পারেন। তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত এ বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের ৫০০ আইনজীবীকে হেনস্তা ও অপমান করেছে। এ বিচারপতির বিরুদ্ধে আমি প্রধান বিচারপতির কাছে বিচার চেয়ে একটি আবেদন করেছিলাম। সে আবেদনের শুনানি করে এ বিচারপতির বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের আদেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে সুপ্রিম কোর্টের মাজারগেটে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি তাঁর কাছে থাকা মামলার নথি ফেরত দেবেন না। নথি ফেরত চেয়ে প্রধান বিচারপতির দেওয়া আদেশ ‘অবৈধ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে সুপ্রিম কোর্টের মাজারগেটে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেনে।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোববার সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা তাঁর হাতে লেখা রায় ও আদেশগুলো গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন। এ জন্য তিনি বেঞ্চের আরেক বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর কাছে তাঁর লেখা রায় ও আপিলগুলো জমা দিতে যাচ্ছেন। তবে কিছুতেই তিনি মামলার নথি ফেরত দেবেন না। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে অনুমতি ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করা যাবে না- সকালে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য আসার পর হাইকোর্টের মাজার গেটের বাইরে থাকা বটগাছের নিচে দাঁড়িয়ে কথা বলেন তিনি।বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, দুপুর দেড়টায় আমার সিনিয়র নেক্সট বিচারপতি ইমান আলীর সঙ্গে দেখা করেছি। নিয়ম অনুযায়ী ফাইলগুলো তার কাছে যাবে। তার সঙ্গে আমি আলাপ করেছি। তিনি এটা গ্রহণ করবেন। এখনই যাচ্ছি তার কাছে যাওয়ার জন্য।আপিল বিভাগ থেকে গত বছরের অক্টোবর মাসে অবসরে যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। এরপর তার হাতে থাকা রায়গুলো আপিল বিভাগ গ্রহণ করছেন না বলে অভিযোগ করে রোববার প্রধান বিচারপতি বরাবরে চিঠি দেন।

চিঠি দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের পাশে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন একটি ব্যাখ্যা দেন। সে ব্যাখ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বলেন, অবসরপ্রাপ্ত এ বিচারপতি রায় জমা দিতে আসেননি। সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে অনুমতি ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করা যাবে না। এরপরই কোর্টের ভেতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলে কোর্টের বাইরে মাজার গেটে বটগাছের নিচে কথা বলেন তিনি।এ সময় বিচারপতি শামসুদ্দিন বলেন, বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা গতকাল (রোববার) সন্ধ্যায় রায় গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। এটা খুশির খবর। আমার হাতে লেখা রায় তারা গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। এটা যদি প্রধান বিচারপতি না করতেন, তাহলে অনেক আগে রায় লেখা শেষ হয়ে যেতো।শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, রায় দিয়েছি, এটা বলিনি। রায় নিতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি (বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব) নিতে অপারগ। সাংবাদিকদের সঙ্গে রোববারের আলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গতকাল কেনো সংবাদ সম্মেলন করিনি। প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি দেওয়ার পর সাংবাদিকরা আমার কাছে এসেছেন। তখন আমি বক্তব্য দিয়েছি।

বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীকে গণমাধ্যমে কথা না বলে তাঁর কাছে থাকা মামলার নথিগুলো দ্রুত ফেরত দিতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি। রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যেসব রায় ও আদেশ লেখা শেষ করেছেন, সেগুলো জমা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি সেগুলো গ্রহণের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর সুপ্রিম কোর্ট সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁকে সব ফাইল ফেরত দিতে বলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিচার চলাকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলন করাকে নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করা হয়। সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি আশা করেন, বর্তমান ও ভবিষ্যতে বিচারপতিরা কোর্টের পবিত্রতা ও মর্যাদা বজায় রাখতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবেন।গত সেপ্টেম্বরে অবসরে যাওয়ার আগে পেনশন আটকে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী একাধিকবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেন। আর অবসরে যাওয়ার পরপরই তিনি প্রধান বিচারপতির অভিশংসন চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেন।

বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীকে গণমাধ্যমে কথা না বলে তাঁর কাছে থাকা মামলার নথিগুলো দ্রুত ফেরত দিতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি।রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যেসব রায় ও আদেশ লেখা শেষ করেছেন, সেগুলো জমা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি সেগুলো গ্রহণের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর সুপ্রিম কোর্ট সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁকে সব ফাইল ফেরত দিতে বলেন।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিচার চলাকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলন করাকে নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করা হয়। সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি আশা করেন, বর্তমান ও ভবিষ্যতে বিচারপতিরা কোর্টের পবিত্রতা ও মর্যাদা বজায় রাখতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবেন।

গত সেপ্টেম্বরে অবসরে যাওয়ার আগে পেনশন আটকে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী একাধিকবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেন। আর অবসরে যাওয়ার পরপরই তিনি প্রধান বিচারপতির অভিশংসন চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেন।জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, কর্মরত বিচারপতি ও অবসরে যাওয়া বিচারপতিরা কে কখন কীভাবে রায় লিখবেন, এ নিয়ে চলা বিতর্ক নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে মীমাংসা করাই শ্রেয়। প্রকাশ্য বিতর্কে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি, সম্মান ও মর্যাদা কোনোটাই বাড়ছে না।সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অবসরে যাওয়ার পর তিনি যেসব রায় ও আদেশ লেখা শেষ করেছেন, সেগুলো গ্রহণের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে ৪ ফেব্র“য়ারি একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার প্রিসাইডিং জজ, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে আমার লেখা শেষ হওয়া রায় ও আদেশগুলো গ্রহণ করার অনুরোধ করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির লিখিত রায় ও আদেশ গ্রহণ করা যাচ্ছে না। সাংবাদিকদের তিনি ওই চিঠির অনুলিপি সরবরাহ করেন।

তবে রোববার রাত ১১টার দিকে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, তাঁর হাতে লেখা রায় ও আদেশগুলো গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। তিনি বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা-সাতটার দিকে বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞা তাঁকে জানিয়েছেন, তিনি যেসব মামলার রায় ও আদেশ লেখা শেষ করেছেন, সেগুলো গ্রহণ করা হবে। শিগগিরই সেগুলো তিনি হস্তান্তর করবেন।এর আগে গত শনিবার রাতে যমুনা টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি যেসব মামলার বিচারক ছিলাম, সেগুলোতে আমি যদি সই না করি, তাহলে রায়গুলো তো রায় হবে না। প্রধান বিচারপতি যদি গায়ের জোরে এগুলো পাঠিয়ে দেন এবং আমার সই ছাড়াই রায় হিসেবে গণ্য করার আদেশ দেন, এগুলো চ্যালেঞ্জ হবেই।