DoinikBarta_দৈনিকবার্তা tabith1

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ এপ্রিল: ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও-গুলশান সংযোগ সড়কে অবস্থিত নির্বাচনী কার্যালয়েএই ইশতেহার প্রকাশকরা হয়।আদর্শ ঢাকা আন্দোলন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে চার পৃষ্ঠার ইশতেহার পড়ে শোনান তাবিথ। খাদ্যে ভেজাল রোধ, সুলভ খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, পরিবহন, পরিবেশ, সামাজিক উন্নয়ন, বিনোদন, জনস্বাস্থ্য, ডিজিটাল সেবা, জননিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, নগর প্রশাসন প্রভৃতি বিষয়ে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।

আদর্শ ঢাকা গড়তে ইশতেহারে উল্লেখ করা অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মেয়রের এখতিয়ার নিয়ে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নে তাবিথ বলেন, আমি নির্বাচিত হলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নগরের সমস্যার সমাধান করব।বিরোধী জোট-সমর্থিত হওয়ায় সরকারের কাছ থেকে কতটুকু সমর্থন পাবেন-এমন প্রশ্নে তাবিথ বলেন, নির্বাচনে যে গণজোয়ার ও গণ আকাক্ষার প্রকাশ ঘটবে, তা দেখে যেকোনো সরকারই নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে বাধ্য হবে।ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক এমাজউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, নগরে বিদ্যমান সমস্যার কার্যকর সমাধানে যেসব পরিকল্পনা তাবিথ তুলে ধরেছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। এ জন্য তাঁকে (তাবিথ) ভোট দিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্যসচিব শওকত মাহমুদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ প্রমুখ।

ইশতেহার ঘোষণার আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ তাবিথের মা নাসরিন আউয়াল, স্ত্রী সওসান ইস্কান্দার, ভাই তাফসির আউয়ালকে পরিচয় করিয়ে দেন।মেয়র নির্বাচিত হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।তাবিথ নির্বাচনী ইশতেহারে ১২ দফায় ৮৩টি প্রতিশ্র“তি উল্লেখ করেন।যেহেতু তিনি বিএনপির সমর্থন নিয়ে এসেছেন,সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাবেন কিনা বর্তমান সরকারের- প্রশ্নটা ছিল এমন।

উত্তরে তাবিথ বলেন, অবশ্যই আমি একটি দলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে এসেছি। আমি যদি মেয়র নির্বাচিত হই, তখন আমি জনগণের প্রতিনিধি। সে আসনে জনগণ আমাকে নেবে। তাই তাদের জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তার জন্য সরকারের সঙ্গে মত বিনিময় করবো।খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, যানজট নিরসন ও যানবাহন সুবিধা, নগর পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও জনস্বাস্থ্য, ডিজিটাল সেবা, জননিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, নগর প্রশাসন- এসব ক্ষেত্রে কাজ করার কথা ইশতেহারে জানালেন তাবিথ।

সিটি নির্বাচনে উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ১২ দফায় ৮৩টি প্রতিশ্র“তির কথা জানালেন নিজের নির্বাচনী ইশতেহারেখাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, যানজট নিরসন ও যানবাহন সুবিধা, নগর পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও জনস্বাস্থ্য, ডিজিটাল সেবা, জননিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, নগর প্রশাসন-এই ১২টি ক্ষেত্রে মোট ৮৩ পদক্ষেপে ঢাকাকে আদর্শ শহরে পরিণত করার কথা দেন এ প্রার্থী।কিছু ক্ষেত্রে অন্য দেশের উদাহরণ ধরে কাজ করার কথা বলেন তাবিথ। জাপানের মতো নগরকৃষি ব্যবস্থা চালুর ইচ্ছার কথা বললেন। শেয়ার মার্কেটের একটি ডিসপ্লে তিনি উত্তরের দিকেও স্থাপনের উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। যাতায়াত ব্যবস্থায় সবার সুবিধা দেওয়ার চেষ্টাসহ আরও কিছু বিষয়ে নতুনত্ব দেখানোর কথা বলেন তাবিথ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে আমি জনগণের মেয়র। সে হিসেবেই কাজ করবো। ব্যবসায়ী হিসেবে অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি, আয় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে সিটিতে। সে সুযোগটি কাজে লাগাবো।অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকেই আমরা বিচ্ছিন্ন করতে চাই না ঢাকা থেকে। এখানে যারা আছেন তারা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বাস করবেন।বিনামূল্যে চিকিৎসা, যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো করা যাতে বস্তির মানুষগুলোও ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারেন সে সব ব্যবস্থা নেব। আমরা হয়তো এখনো ভাবতে পারছি না যে, সবাই সহাবস্থান সম্ভব। সেটিই করতে হবে।ভিন্ন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাদের মতো আমিও ক্ষিপ্ত।ঢাকাতে বড় হয়েছি।অনেক কিছু এ নগরবাসী পায়নি। তাই নিজেই এগিয়ে এসেছি। ২০০৯ সালের পর জনগণ তেমন কোন প্রতিনিধি পায়নি, এবার পাবে। সবার চাওয়াগুলো পূরণ হবে।

তাবিথ বলেন, আমি বস্তিসহ বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল খেলে বড় হয়েছি। সবার সঙ্গে বড় হয়েছি। তাই বস্তির ছেলেকে কোলে নেওয়া নির্বাচনী কৌশল নয়।তিনি বলেন, আমি যদি রাজনীতিতে নতুন হই, তাহলে কেন ২৫ ডিসেম্বর রাতে আমাকে আটক করা হল?সিটি মেয়র যে দলের থাকেন, সে দলের লোকরাই টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকে। এ থেকে বের হতে পারবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, জোনাল অফিসের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী সব হবে।পাবলিক ডোমেইনে সব তথ্য রাখা থাকবে। তাই জনগণ সচেতন থাকবে এসব বিষয়ে। এর আগে সাবেক মেয়ররা হয়তো ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই,তারা অন্তত উদ্যোগটা নিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে মত বিনিময় করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।ভিন্ন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনীতির ইস্যু কেন করা হবে? তাদের প্রতি সম্মান রেখে আমরা কাজ করবো।ইশতেহার ঘোষণা শেষে সবার দোয়া চান তাবিথ।তাবিথের পরই বক্তব্য রাখেন আদর্শ ঢাকা আন্দোলন এর আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ।এমাজউদ্দিন বলেন, এ প্রার্থী তরুণ প্রার্থী। উচ্চশিক্ষিত প্রার্থী। ৩০ বছরের নিচে যারা প্রার্থী সম্ভাবনাময় তরুণভোটারদের পছন্দের হবেন তারা। ইশতেহারে যে প্রতিশ্র“তি দেবেন, সেসব রক্ষা করতে তাবিথ চেষ্টা করে যাবেন।

ছোট ছোট সমস্যাগুলোকে কীভাবে সমাধান করা যায়, সেগুলো নিয়ে তাবিথের চিন্তা-ভাবনার প্রশংসা করেন তিনি।ইশতেহার ঘোষণার আগে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’ এর সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।তিনি বলেন, এ প্রার্থীকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। বিশ্বাস করি, এ প্রার্থী নির্বাচিত হলে একটি পরিচ্ছন্ন রাজনীতির পরিবেশ পাব। আমরা সুন্দর শহর দেখতে চাই।তিনি বলেন,নগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে পাব বলে বিশ্বাস করি। নীরব বিপ্লব দেখবো বলে বিশ্বাস করি।মওদুদ বলেন, তাবিথের পরিবারের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক আমার। তাবিথকে তরুণ, সৎ, নতুন ও উদীয়মান তরুণ হিসেবে আখ্যায়িত করতে চাই।