নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের বিচার শুরু

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত ৭ খুনের দুটি মামলায় র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ আসামী আসামীপক্ষে আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আগামী ১৬ জানুয়ারী আলোচিত সাত খুন মামলার চূড়ান্ত রায়ের দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী আশা করেন আসামীদের সর্বোচ্ছ সাজা হবে। তবে আসামীপক্ষের আইনজীবীদের দাবি, আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়নি। তারা ন্যায়বিচার পাবে।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, বুধবার ৭ খুনের দুটি মামলায় প্রধান আসামী নূর হোসেন, র‌্যাবের চাকুরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কর্ণেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেনেন্ট কমান্ডার এম এম রানাসহ ২৩ আসামীর উপস্থিতিতে ৩৫ আসামীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আগামী ১৬ জানুয়ারী রায়ের দিন ধার্য করেন।

তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে শেষ দিনের মতো এই যুক্তিতর্ক শুরু হয়। ৭ খুনের ঘটনায় র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা এম এম রানা, বজলুর রহমান ও আসাদুজাজামানের পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন করেন। এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ২৩ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলায় ১২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহন ও জেলা সম্পন্ন হয়। গত ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রথম দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তারপর আসামীপক্ষের আইনজীবীরা ৬ দিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী যুক্তিতর্ক শেষে আদালতের কাছে আসামীদের রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আবেদন করেন। রায়ের তারিখ নির্ধারনের পর আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াৎ হোসেন খান বলেন, আলোচিত এ মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমানে সাতজনকে কেন কোথায় কি ভাবে হত্যা করা হয় তা আদালতে প্রমান করতে পেরেছেন। এই মামরার সব আসামীর সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আদালতে সাত খুনের বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। তাই তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। তিনি খুনিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আশাবাদী।এদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী সুলতানুজ্জামানের দাবি আসামীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হয়নি। তিনি বলেন, আসামীরা অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন।এদিকে জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, সাত খুনের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় ৩৫ জন আসামীর মধ্যে বর্তমানে র‌্যাবের ৮ সদস্যসহ ১২ জন পলাতক রয়েছে। তবে পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লা থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও তাঁর চার সঙ্গী এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়ির চালক। এর তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়।