সাম্প্রদায়িকতা, কুসংস্কার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত হতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে এগিয়ে নিতে বেসরকারি সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের পধ চলার অবিনাশী চেতনা, যার পুরোধা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ চেতনায় বার বার আঘাত এসেছে। ভূলুন্ঠিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কিন্তু এদেশের জনগণ কখনও তা মেনে নেয়নি।

স্বৈরাচার, সামরিকতন্ত্র, মৌলবাদের উত্থান আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে অনেক সময় বাধাগ্রস্ত করেছে। এখনও সাম্প্রদায়িকতা, কুসংস্কার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে টেনে ধরছে। এ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে এগিয়ে নিতে হবে। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে মানবিকতার বিকাশ ঘটাতে হবে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে। বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুবউল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত ২৮তম মাহবুবউল্লাহ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি সামাজিক উন্নয়নে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান।

আমাদের সমাজে অনেক বিত্তবান লোক রয়েছেন, তাদের অর্থের অভাব নেই। তারা বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন। আমি তাদের আহ্বান জানাব, আপনারা দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধ থেকে নিজ নিজ এলাকায় শিক্ষা বিস্তারসহ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখুন। আর্ত-মানবতার সেবায় এগিয়ে আসুন।কিশোরগঞ্জের নিজের নির্বাচনী এলাকার মানুষের অবদানের কথা তুলে ধরেন সাতবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আবদুল হামিদ।হাওর এলাকার প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, যখন ঝড়বৃষ্টিতে হাওড়ে আফাল সৃষ্টি হয় তখন বাড়িঘর জন্য মানুষের সীমাহীন কষ্ট তা আমি দেখেছি।এ কারণে ছোটবেলা থেকেই পণ ছিল আমি তাদের কল্যাণে কিছু করব। সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থাকব। আমার সারাজীবনের রাজনীতির মূল প্রচেষ্টা ছিল এলাকার উন্নয়ন, দুঃখঅ মানুষেল মুখে হাসি ফোটানো। সেটা কতটুকু করতে পেরেছি তা এলাকার জনগণ মূল্যায়ন করবেন। শিল্পকলার একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সাহিত্য, বিজ্ঞান (কৃষি), শিল্পকলা, এবং মানবাধিকারে অবদান রাখার জন্য তিনজন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।পদকপ্রাপ্তরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কার্টুনিস্ট রফিকুন নবী, মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবউল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জোবায়দা মাহবুব লতিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রমুখ।